হতদরিদ্র এক নারীকে সেলাই মেশিন দেয়ার কথা বলে কার্যালয়ে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে। ঘটনার শিকার ওই নারী সন্ধ্যায় বিশ্বম্ভরপুর থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেছেন।
Advertisement
বুধবার বিকেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের আলাদা একটি রেস্ট রুমে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই নারীর চিৎকারে এলাকাবাসী ও পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকাবাসী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাগগুয়া গ্রামের চার সন্তানের জননী ওই দরিদ্র নারী মহিলা অধিদফতরের সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেন। চূড়ান্ত তালিকায় প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণের অনুমোদন দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। ওই নারী তাকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগ দানের জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হারুনুর রশিদকে অনুরোধ জানান।
Advertisement
গত কয়েকদিন ধরে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলছেন চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ। তাকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণসহ একটি সেলাই মেশিন দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
বুধবার তাকে আইডি কার্ড ও ছবি নিয়ে আসার কথা বললে দুপুরে ওই নারী চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ওই নারীকে দোতলায় তার কার্যালয় লাগোয়া একটি খাস কক্ষে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।
পরে ওই নারী কক্ষে গেলে কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যানও ওই কক্ষে এসে দরজা বন্ধ করে তাকে কুপ্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয় বলে তিনি লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন উপজেলা পরিষদের দোতলায় জড়ো হন। এ সময় এসআই আরিফ ছুটে এসে ওই নারীকে দোতলা থেকে উদ্ধার করেন।
Advertisement
পরে তিনি উপস্থিত পুলিশ ও জনতার কাছে নির্যাতনের ঘটনা খুলে বলেন এবং তিনি ধর্ষিত হয়েছেন বলেও স্বীকার করেন। তবে জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে চেয়ারম্যান সুযোগে সটকে পড়েন। সন্ধ্যায় স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমরা ওই নারীর একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে সহায়তা দেয়ার কথা বলে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি ভিকটিমকে মেডিকেল চেকআপের জন্য পাঠিয়েছি।
তবে অভিযুক্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদের মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এফএ/আরআইপি