আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা কাজ করলেও এরই মাঝে ‘দৌড়ঝাঁপ' শুরু করেছেন প্রায় সব রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে শেষ ঈদে ‘এক ঢিলে দুই পাখি' মেরেছেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
Advertisement
ঈদুল আজহায় চট্টগ্রামের শহর-গ্রাম সব স্থানেই চোখে পড়েছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনসংযোগ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি- বড় এই তিন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা গেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রায় প্রতিটি আসনেই বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থিতার ছড়াছড়ি। মন্ত্রী-এমপিরা ঘন ঘন যাচ্ছেন নিজ এলাকায়। ভোটাররাও চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন তাদের কর্মকাণ্ডের।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভিত্তিক প্রস্তুতি, দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, সর্বশেষ অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, মাঠের অবস্থাইবা কী- এসব নিয়ে জাগো নিউজ’র ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘ভোটের বাদ্য’। অষ্টম কিস্তিতে আজ থাকছে ‘চট্টগ্রাম-৮’ এর সার্বিক চিত্র।
মইন উদ্দীন খান বাদল, মোসলেম উদ্দীন আহমদ ও আবদুচ ছালাম
Advertisement
বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রাম। মহান এসব সাধকের অন্যতম হযরত বো-আলী কালন্দর। তার নাম অনুসারে কয়েকশ বছর আগে কর্ণফুলির দক্ষিণ তীরের জনপদ বোয়ালখালীর নামকরণ। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও বোয়ালখালী এক অবিস্মরণীয় নাম। বহুল আলোচিত সেই বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার পুরো অংশ এবং পাঁচলাইশ ও বায়েজিদ বোস্তামী থানার আংশিক নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ সংসদীয় আসন।
আরও পড়ুন >> আ.লীগের হাছান মাহমুদ, বিএনপির হুম্মাম কাদের?
এ সংসদীয় আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৭০ হাজার ৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ৩৯ হাজার ১৩৯ এবং মহিলা ভোটার দুই লাখ ৩০ হাজার ৯৩৩ জন। তবে এ আসনে বোয়ালখালী উপজেলার ভোটারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভোটার নগরের পাঁচটি ওয়ার্ডে (৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড)।
পরপর দু’বার জোটের শরিক জাসদকে আসন ছেড়ে দেয়ার পর এবার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভেতরেই জোর দাবি উঠেছে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনে দলীয় প্রার্থী দেবার। আওয়ামী লীগে যে অংশটি বর্তমান সংসদ সদস্য জাসদ নেতা মইন উদ্দীন খান বাদলের সঙ্গে ছিলেন তারাও নতুন মুখের দাবি জানিয়েছেন। তবে সেখানেও বিপত্তি। আওয়ামী লীগের ভেতরে রয়েছে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী। সব মিলিয়ে জোটের আর ভোটের হিসাবে এখানে দারুণ জটে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
Advertisement
গত দুই নির্বাচনে এ আসনে মহাজোটের শরিক জাসদকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমপি নির্বাচিত হন। এবারও তিনি নৌকায় চড়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান। কিন্তু এবার তাকে ছাড় দিতে চান না আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
এম মোরশেদ খান, আবু সুফিয়ান ও এরশাদ উল্লাহ
ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় আছেন- দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দীন আহমদ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং দক্ষিণ জেলা শাখার তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন। এছাড়া আছেন নগর শাখার সহ-সভাপতি ও মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে তরুণ শিল্পপতি মুজিবুর রহমান। মইন উদ্দীন খান বাদল জাসদে থাকলেও তার স্ত্রী সেলিনা খান কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে চাইছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে বিএনপি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী। কোনো কারণে মোরশেদ খানের মনোনয়ন পেতে সমস্যা হলে প্রার্থী হবেন তারই রাজনৈতিক শিষ্য নগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান। তাই একক প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে মোটেও বেগ পেতে হবে না বিএনপিকে। এছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহ দেখিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ।
বোয়ালখালী আসনে ১৯৭৩ সালের পর আর কখনও জয়ী হতে পারেনি আওয়ামী লীগ। তবে প্রায় তিন দশক পর ২০০৮ সালে জোটপ্রার্থীর হাত ধরে আসনটি ফিরে পায় দলটি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন মহাজোটের প্রার্থী জাসদের কার্যকরী কমিটির সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি আবারও নির্বাচিত হন। তবে টানা দুবার বঞ্চিত হলেও এবার আশার আলো দেখছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। গত দু’বার জোটের টিকিটে জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল এমপি হলেও এবার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে মইন উদ্দীন খান বাদলের বিরোধের কারণে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী দেয়ার সম্ভাবনা জোরালো।
স্থানীয় এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মোসলেম উদ্দীন আহমদ
আরও পড়ুন >> চ্যালেঞ্জের মুখে ফজলে করিম, বিএনপির ভরসা সাকা পরিবার
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, দু’বার ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করে। কিন্তু বোয়ালখালীতে মইন উদ্দীন খান বাদল তেমন কোনো উন্নয়ন দেখাতে পারেননি। তাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভক্তি ছড়িয়ে ফায়দা নিচ্ছেন বর্তমান সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের যে অংশটি এই জাসদ নেতার পেছনে ছিলেন, সম্প্রতি তারাও সরে দাঁড়িয়েছেন।
তবে এত কিছুর পরও জোটগতভাবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেলে শরিক দল হিসেবে মইন উদ্দিন খান বাদল এ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হবেন- এমনটি আশা প্রকাশ করেছেন উপজেলা জাসদের নেতৃবৃন্দ। সম্প্রতি বাদল অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার সহধর্মিনী সেলিনা খান বাদল মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেও গুঞ্জন চলছে।
জোটের হিসাব বাদ দিলেও এখানে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ তীব্র। কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম আবুল কালামের অনুসারীরা বিগত দিনে মইন উদ্দিন খান বাদলের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। এবার তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে চাইছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজনকে। গত ২২ সেপ্টেম্বর উপজেলা ডাকবাংলোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তারা এ তথ্য জানান।
এদিকে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বোয়ালখালীতে মোসলেম উদ্দিন আহমদের অবস্থান অনেক সুদৃঢ় বলে অভিমত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। তাদের দাবি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতৃবৃন্দদের নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করছেন। তৃণমূলও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মোছলেম উদ্দিন আহমদকে চট্টগ্রাম-৮ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান।
ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের হাত ধরে চট্টগ্রামে একাধিক মেগা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ছালাম ২০০৮ এর নির্বাচনে চট্টগ্রামের এ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি এবারও চট্টগ্রামের এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে তার অনুসারীরা জানিয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্যপ্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছেলে মুজিবুর রহমানও।
আরও পড়ুন >> আ.লীগ-বিএনপির গলার কাঁটা জোট-মহাজোট!
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকারের দমন-পীড়নের কারণে তারা বিগত সময়ে দলীয় কর্মকাণ্ড চালাতে পারেননি। সবকিছুই ছিল অনুষ্ঠাননির্ভর। তবে ভোটের রাজনীতিতে তারা দুর্বল নন। আওয়ামী লীগ সরকারের দুই দফা মেয়াদে বোয়ালখালীতে উপজেলা চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর নির্বাচনে তারা বিজয়ী হয়েছেন। এ ধারাবাহিকতা সংসদ নির্বাচনেও থাকবে। সব মিলিয়ে হারানো এ আসন পুনরুদ্ধারে মরিয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আসছে নির্বাচনে বিএনপির ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। তাকে একক প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান বিএনপির স্থানীয় নেতারা। দীর্ঘদিন পর এম মোরশেদ খান আবারও নির্বাচনে ফিরে আসায় নেতাকর্মীদের মধ্যে একটা চাঙাভাব বিরাজ করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে আয়োজিত সভা-সমাবেশে মোরশেদ খানের জন্য ভোট প্রার্থনা করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিনের বিভেদ ভুলে ত্রি-ধারায় বিভক্ত বোয়ালখালী বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের প্রার্থীকে জয়ী করতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এম মোরশেদ খানের শারীরিক অসুস্থতা ও আইনি জটিলতায় নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে সে ক্ষেত্রে দলের বিকল্প প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানের নাম শোনা যাচ্ছে জোরেশোরে।
আলোচনায় আছেন মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদ উল্লাহর নামও।
এদিকে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সহ-সভাপতি আমান উল্লাহ এ আসনের সম্ভাব্যপ্রার্থী। ২০০১ সালেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এবারও জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করলে তার অংশ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক ইসলামী ফ্রন্টের চট্টগ্রাম নগর উত্তরের সভাপতি নাইমুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব স ম আবদুস সামাদেরও নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সম্ভাব্যপ্রার্থী মোসলেম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত দশ বছরে কর্ণফুলী নদীর ভাঙন রোধ, বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু নির্মাণের প্রস্তুতিসহ বোয়ালখালীতে হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। ধারাবাহিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে জনগণ আগামী দিনেও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন।’
‘এবার আর বাইরের কাউকে এই প্রতীকে চান না স্থানীয়রা। আশা করি কেন্দ্র এবার জোট থেকে নয়, দল থেকে মনোনয়ন দেবে। স্থানীয় নেতাকর্মী ও ভোটাররা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই দেখতে চান।’
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘গত দুই নির্বাচনে দলের প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু মহাজোটের স্বার্থে সভানেত্রীর সিদ্ধান্ত আমি মেনে নেই এবং দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করি। এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। তবে এ ক্ষেত্রে সভানেত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নেবো।’
অপর সম্ভাব্যপ্রার্থী দক্ষিণ জেলা শাখার তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন বলেন, ‘আমি তৃণমূল থেকে উঠে আসা আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। নির্বাচন করার আগ্রহ আমারও রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’
বেশকিছুদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে সরব এম মোরশেদ খান
আরও পড়ুন >> আ. লীগ-বিএনপিতে অস্বস্তি, সুযোগ নিতে চায় জাপা-জামায়াত
বর্তমান সংসদ সদস্য মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক সহযোগিতায় আমার সংসদীয় আসনে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় নতুন কালুরঘাট সেতু প্রকল্প।’
‘এখানে আমি কী করেছি, জনগণ তার মূল্যায়ন করবেন। জোটের শরিক হিসেবে এ আসনের প্রার্থী আমি। আওয়ামী লীগ যদি এককভাবে নির্বাচন করে, তাহলে ভিন্ন কথা।’
এদিকে বোয়ালখালী বিএনপির সভাপতি মোস্তাক আহমদ খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ আসনে কখনও আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারেনি। বোয়ালখালী বরাবরই বিএনপির দুর্গ। এ আসনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান ধানের শীষ প্রতীকের একক প্রার্থী। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষ প্রতীক বিপুল ভোটে জয়ী হবে।’
নগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এম মোরশেদ খান আমার নেতা। কোনো কারণে তিনি নির্বাচন করতে না পারলে সে ক্ষেত্রে দলের মনোনয়ন চাইবো। ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত দলের সঙ্গে আছি, এলাকার মানুষের সঙ্গেই আছি। দলের নীতিনির্ধারক মহল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেয়, তাহলে নির্বাচন করবো।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মইন উদ্দীন খান বাদল
নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘২০০৮ সালে দলের চরম দুঃসময়ে নির্বাচন করেছিলাম। এবারও মনোনয়ন চাইবো।’
বিগত নির্বাচনের ফলাফল
এ আসন থেকে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের মো. কফিল উদ্দিন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন বিএনপির সিরাজুল ইসলাম। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে এবং ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে এম মোরশেদ খান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মাঝে ১৯৮৮ সালে জয়লাভ করেন জাতীয় পার্টির কামরুন নাহার জাফর।
[‘ভোটের বাদ্য’র নবম কিস্তিতে থাকছে ‘চট্টগ্রাম-৯’ আসনের সম্ভাব্যপ্রার্থীদের নাম এবং তাদের নিয়ে স্থানীয়দের চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন জাগো নিউজে]
আবু আজাদ/এমএআর/আরআইপি