আন্তর্জাতিক

ধর্ষণের দুঃস্মৃতি প্রকাশ করলেন সালমান রুশদির স্ত্রী লক্ষী

মাত্র ১৬ বছর বয়সে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ-ভারতীয় ঔপন্যাসিক ও কলামিস্ট সালমান রুশদির সাবেক স্ত্রী পদ্মা লক্ষী। ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিনী মডেল ও লেখিকা পদ্মা লক্ষ্মী। প্রায় ৩২ বছর পর তিনি এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন।

Advertisement

নিউইর্য়ক টাইমসে লেখা এক নিবন্ধে পদ্মা জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলসে তিনি ২৩ বছরের এক পুরুষের সঙ্গে ডেটিং শুরু করেন। ডেটিংয়ের কিছুদিন পর নববর্ষের এক সন্ধ্যায় প্রেমিক তাকে ধর্ষণ করেন। কিন্তু ঘটনার পর তার মনে হতে শুরু করে, এ ঘটনায় অপরাধ করেছেন তিনি।

মেয়েরা যে যৌন হয়রানি নিয়ে মুখ খুলতে পারে না, সেটাও ক্রমশ বুঝতে শুরু করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দুই নারীর যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন বিচারক ব্রেট কাভাবাফের বিরুদ্ধে তোলা এ অভিযোগ কেন দীর্ঘদিন গোপন করেছিলেন ওই নারী; সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প।

আরও পড়ুন : ‘ভালোবাসা থাকলেও কখনো যৌন মিলন হয়নি’

Advertisement

এ প্রসঙ্গে পদ্মা লক্ষী তার নিবন্ধে লিখেছেন, তিনি বুঝতে পারছেন, কেন এতদিন অভিযোগ করেননি ওই নারীরা। এমনকি তিনি নিজেও একই ধরনের কাজ করেছেন।

পদ্মা লক্ষ্মী তার মুখ না খোলার কারণ হিসেবে বলেন, সাত বছর বয়সে তার সৎবাবার এক আত্মীয়র কাছে যৌন নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছিল। কিন্তু সেই ঘটনা তার মাকে বলার পর মা তাকেই উল্টা এক বছরের জন্য ভারতে পাঠিয়ে দেন।

সেখানে পদ্মা তার দাদার কাছে থাকতেন। পদ্মা বলেন, ‘আমি সেখান থেকে একটা শিক্ষা পেয়েছিলাম; তা হলো তুমি যদি মুখ খোলো তবে তোমাকেই বের করে দেয়া হবে। তোমার সততা নিয়েও সমাজ প্রশ্ন তুলবে।’

মার্কিন এক টেলিভিশনের উপস্থাপিকা পদ্মা লক্ষী জানান, তার সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছিল লস অ্যাঞ্জেলসে। তার প্রেমিকের বয়স তখন ২৩ বছর। বর্ষবরণের রাতে বেশ কয়েকটা পার্টিতে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে যান দু’জনে। বয়ফ্রেন্ডের ফ্ল্যাটে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। আচমকা জেগে দেখেন, বয়ফ্রেন্ড তার শরীরের ওপর। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন : কাতার এয়ারওয়েজের বিমানে শিশুর মৃত্যু

কিন্তু তিনি বাড়ি ফিরে সেই ঘটনা পরিবার কিংবা পুলিশ কারও কাছেই অভিযোগ করেননি। ১৯৮০ সালে পরিস্থিতি এমন ছিল যে, এসব কথা বলা সম্ভব ছিল না বলেই জানিয়েছেন পদ্মা। তিনি লিখেছেন, সেসময় এই কথা বলা হলে, পরিবারের সদস্যরা তার চরিত্র নিয়েই প্রশ্ন তুলত।

পদ্মা খুব স্পষ্টভাবে তার লেখায় বলেছেন, ধর্ষণের আগ পর্যন্ত তাকে কেউ কোনোদিন স্পর্শ করেনি। তিনি চান না তার চারপাশে থাকা মেয়েরা এভাবে তাদের সঙ্গে ঘটা কোনো যৌন হয়রানি অথবা ধর্ষণের ঘটনা ভয় পেয়ে চেপে যাক।

বরং মন খুলে বলুক, কারণ এখন সমাজ অনেক আধুনিক। পদ্মা লক্ষীর এই বক্তব্যকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। অনেক নারীই তার লেখাটি রিট্যুইট করে বাহবা দিয়েছেন।

এসআইএস/এমএস