আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করবে বিএনপি। বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হতে বলেছেন শীর্ষ নেতারা। বিএনপির এই ঘোষণাকে পাত্তাই দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপি তো বহুদিন ধরেই আন্দোলন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের আন্দোলনে জনগণ সাড়া দেয়নি। বিএনপির আন্দোলন আর জমবে না।
Advertisement
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকেই মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন ১৪ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবের এক সভা থেকে সরকার পতনের আন্দোলনের জন্য পহেলা অক্টোবর থেকে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণকে সাথে নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এবং আগামী নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা এ সরকারকে অপসারণ করব। এ জন্য ১ অক্টোবর থেকে রেডি হয়ে নেয়ার আহ্বান জানান মওদুদ।
এছাড়া আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এদিকে ১৪ দল জানায় গত সোমবারই তারা ঘোষণা দিয়েছে ২৯ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করা হবে।
Advertisement
একই দিনে ঢাকা মহানগরীতে ১৪ দল এবং বিএনপির সমাবেশ ঘোষণা এবং ঢাকা দখলে রাখার ঘোষণা সাধারণ মানুষকে অনেকটা দুঃশ্চিন্তায় ফেলেছে। সাধারণ মানুষ ভাবছেন কী হবে অক্টোবরে? অক্টোবরে নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হবে। বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ না নেন তাহলে দেশের পরিস্থিতি কী হবে? এমন অনেক প্রশ্ন দানা বাঁধছে সাধারণ মানুষের মনে।
অক্টোবরের প্রথম দিন থেকে সরকার পতনের আন্দোল শুরু করবে বিএনপি- এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিএনপি কাগুজে বাঘ। এর আগেও এ রকম হুংকার দিয়েছে। জনগণ তাদের হুংকারে ভয় পায়নি। বহুবার তারা এ রকম আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে কিন্তু জনগণ তাদের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি। ফলে তারা নিজেরাই ঘরে ঢুকে গেছে।’
মঙ্গলবার ১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মোহাম্মদ নাসিম বলেন, চক্রান্তকারীরা মাঠে নামবে। আমরা আগে থেকেই ঢাকা দখলে নেব। আগামীতেও ঢাকা আমাদের দখলে থাকবে। শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশ শেখ হাসিনার দখলে থাকবে বলে ঘোষণা দেন নাসিম।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) মুহম্মদ ফারুক খান জাগো নিউজকে বলেন, মওদুদ আহমেদ একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। এ ধরনের কথা তার মতো আইনজীবীর বলা উচিত নয়। কারণ নির্বাচনের আর তিনমাস বাকি আছে। এ সময় আন্দোলনের মুখে সরকারের পতন ঘটানোর কথা তাদের দলের নেতাকর্মীদের উস্কিয়ে দেয়ার সামিল।
Advertisement
তিনি বলেন, তাদের আন্দোলনের ঘোষণায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মোটেই বিচলিত নয়। অতীতেও তারা এ ধরনের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তাদের ঘোষণায় জনগণ সাড়া দেয়নি। ফলে ১০ বছরে তাদের ডাকে রাজপথে কোনো আন্দোলন হয়নি। আগামীতেও তারা আন্দোলন করতে পারবে না।
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক দলীয় সভায় বলেন, ‘আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত গোলযোগ করলে হাত-পা ভেঙে দেবেন।’
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত গণতন্ত্রের শত্রু, মানবতার শত্রু, ধর্মের শত্রু, কৃষক ও শ্রমিকের শত্রু। তাই আগামী নির্বাচনে কোনো অশুভ শক্তি বিএনপি-জামায়াতকে সমর্থন দেওয়ার নামে কোনো নৈরাজ্য করলে তা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
এফএইচএস/এসএইচএস/আরআইপি