দেশের শিল্প ও বাণিজ্য খাতের প্রয়োজনে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ‘এফবিসিসিআই বেসরকারি ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। ইতোমধ্যে সরকার এটির অনুমোদনও দিয়েছে। শিগগিরই ইনস্টিটিউটের কাজ শুরু করবে ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনটি।
Advertisement
এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ‘এফবিসিসিআই বেসরকারি ইনস্টিটিউট’ নামের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড। মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবু নাসের।
তিনি বলেন, দেশে অনেক শিক্ষিত লোক আছে। প্রতি বছরই উচ্চশিক্ষায় সনদ নিয়ে লাখ লাখ মানুষ কর্ম বাজারে আসছে। কিন্তু দক্ষ কর্মীর অভাব। খাতভিত্তিক কারিগরি দক্ষকর্মী খুঁজেও পাওয়া যায় না। তাই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে কারিগরি শিক্ষার জন্য একটি ইন্সটিটিউট করার উদ্যোগ নিয়েছে এফবিসিসিআই। ইতোমধ্যে সরকার ইন্সটিটিউটের অনুমোদন দিয়েছে। আমরা শিগগিরই এটির কাজ শুরু করব।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষকর্মী পাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি লোক এনে কাজ চালাতে হচ্ছে। অথচ আমাদের উচ্চ শিক্ষিতরা ১০-১৫ হাজার টাকার চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে। এ দৃশ্য আমরা দেখতে চাই না। তাই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে ইনস্টিটিউট করা হচ্ছে। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবে।
Advertisement
খাতভিত্তিক দক্ষ কর্মী বাহিনী তৈরি করা প্রয়োজন উল্লেখ করে ব্যবসায়ী এ নেতা বলেন, বিভিন্ন খাতের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ কর্মী তৈরি করতে হবে। এজন্য একটি তালিকা তৈরি করা জরুরি যে, কোন খাতে কত লোক প্রয়োজন। সরকারিভাবে এ বিষয়ে একটি তালিকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে এফবিসিসিআই প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশে বেকার ও আংশিক বেকারের সংখ্যা প্রায় ৭১ লাখ। তারপরও দেশের প্রধান প্রধান শিল্প খাতগুলোতে দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে। দেশের মোট আটটি খাতে চাহিদার তুলনায় বর্তমানে শ্রমিক কম রয়েছে ১৭ লাখ ২৭ হাজার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা পরিষদের (বিআইডিএস) এক সমীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্যে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে বিভিন্ন খাতে ৮ কোটি ৮৭ লাখ শ্রমিকের দরকার হবে। ওই সময় পর্যন্ত দেশের নয়টি শিল্প খাতে নতুন করে নিয়োগ দিতে হবে আরও এক কোটি ৬৬ লাখ ৮৪ হাজার শ্রমিক। তাদের মধ্যে দক্ষ শ্রমিক লাগবে ৮০ লাখ, আধাদক্ষ ৫৬ লাখ এবং অদক্ষ শ্রমিক লাগবে ৩১ লাখ। আর ৮০ লাখ দক্ষ শ্রমিকের জোগান নিশ্চিত করতে হলে আগামী আট বছরে মোট ৫৬ লাখ শ্রমিককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষিত বেকাররা প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারলে এ বেকারত্ব যেমন ঘুচবে, তেমনি ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়নও। তা নাহলে উভয় সংকটে ভুগবে বাংলাদেশ।
Advertisement
এসআই/এসআর/এমএস