বিএনপি আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর নয়াপল্টন বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার যে ঘোষণা দিয়েছিল তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দুপুর ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই জনসভা করতে চায় দলটি।
Advertisement
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ এ পরিবর্তনের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির উদ্যোগে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের (বৃহস্পতিবার) পরিবর্তে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) দুপুর ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।’
বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে জনসভা সফল করার জন্য আহ্বান জানান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
Advertisement
‘আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের জন্য দুর্নীতিবাজরা জোট বেঁধেছে’ এবং ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেবে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কাণ্ডজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। তিনি তার সামনে-পেছনে, ডানে-বায়ে যারা তাকে ঘিরে আছে তাদের দিকে তাকান না, শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কুৎসা রটাতেই ব্যস্ত থাকছেন। ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে কিম্ভূতকিমাকার একনায়কতন্ত্র কায়েম করার জন্যই তিনি বেহুঁশ। গণতন্ত্র ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সন্ত্রাসের বেড়াজাল দিয়ে ঘিরে রাখায় স্বৈরাচার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বজোড়া নামডাক হয়েছে। তার মুখে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগার হাস্যকর।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নিকট জাতি জানতে চায়- বিগত দশ বছরে ব্যাংক-বীমা লুটের টাকা গেল কোথায়? শেয়ারবাজার লুটের টাকা গেল কোথায়? ব্যাংকে আমানতকৃত টাকা চেক দিয়ে মানুষ না পেয়ে ফেরত আসে কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করেছে কে? এখনও কেন রিজার্ভ চুরির তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি? আর্থিক খাত ধ্বংস করলো কে? কানাডাতে বেগম পল্লী ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে কারা? গত দশ বছরে বিদেশে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে কারা? প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৪/৫ জন নিরীহ মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে কার নির্দেশে? সর্বোপরি দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ থেকে বিতাড়নের নির্দেশ দিয়েছে কে? বর্তমানে দেশজুড়ে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও লুটপাটের যে মহোৎসব চলছে, প্রধানমন্ত্রী তার অসত্য ভাষণে তা ধামাচাপা দিতে পারবেন না- জনগণ এটিকে নিরেট চাপাবাজি বলেই গণ্য করে।’ রিজভী বলেন, ‘আসল জারিজুরি ফাঁস হওয়ার ভয়েই শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ছেন না। সেজন্য সকলের মুখ বন্ধ রাখতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জাতীয় সংসদে পাশ করেছেন- যেটিকে জনগণ সন্ত্রাসী-আইন বলেই মনে করে। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ফ্যাসিস্ট সরকারেরই ভাষা। কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন শুধু স্বাধীন সাংবাদিকতার পথই রুদ্ধ করেনি, জীবন-জীবিকার নিরাপত্তহীনতায় পড়েছে সাংবাদিক সমাজ। দেশব্যাপী নিরাপত্তাহীনতা ও মানুষের মনে ভীতি ক্রমবর্ধমান।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। দল ও পরিবার থেকে বারবার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠনের দাবিকেও অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সরকারীদলের সমর্থক এবং আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় বিএসএমএমইউ’র চিকিৎসকদের দিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডও দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরে স্ববিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। সরকারি মেডিকেল বোর্ডের বক্তব্য অনুযায়ী বেগম জিয়া গুরুতর রোগে অসুস্থ নন, তাহলে তারা কেন হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলেন? বোর্ড বিএসএমএমইউ অথবা বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন। বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যেন এক প্যারাডক্স তৈরি করা হচ্ছে। অসুস্থ বন্দী সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার অনুপস্থিতে বিচারিক কার্যক্রম বেআইনি। আমি দলের পক্ষ থেকে আবারও দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই-দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ এই মুহূর্তে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’
কেএইচ/এমবিআর/পিআর
Advertisement