জাতীয়

সন্তান বিক্রি করতেই গর্ভধারণ করেন এই যৌনকর্মী

নগদ অর্থে সন্তান বিক্রির জন্যই গর্ভধারণ করেন যৌনকর্মী রেশমা আক্তার। গত বছর সন্তান জন্ম দেয়ার পরপরই ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। বছর না গড়াতেই ফের গর্ভে সন্তান ধারণ করছেন। সেই সন্তান গর্ভে রেখেই দরকষাকষি করছেন এখন। স্বামীর সিদ্ধান্তে দালালের মাধ্যমে নিঃসন্তান পরিবারের কাছে নবজাতককে বিক্রি করেন তিনি।

Advertisement

গত বছরের ২৬ মার্চ ‘সাত মাসের গর্ভ, তবুও খদ্দেরের আশায় রাস্তায়’ শিরোনামে জাগো নিউজে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। একই বছরের ১০ আগস্ট ‘সন্তান বেচে ফের রাস্তায় রেশমা’ শিরোনামে আরেকটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকায় ফের দেখা হয় ভাসমান এই যৌনকর্মীর। পেটে ফের ছয় মাসের সন্তান। এমন অবস্থায়ই খদ্দেরের আশায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে রাত কাটান রেশমা। এ পাড়ায় কখনও রেশমা আবার কখনও লিমা পরিচয় মেলে এই নারীর।

সড়কে দাঁড়িয়েই কথা হয় রেশমার সঙ্গে। বলেন, ঘরে দুই সন্তান আছে। স্বামী নেশাখোর। রাত জাগতে নেশা করতে হয় আমাকেও। অভাবের সংসার। দেহ বিক্রি করে যে টাকা আসে তা থেকে সংসারই চলে না। এর মধ্যে নেশার টাকা। স্বামীকে নেশার টাকা দিতে না পারলে মারধর করে। একটি সন্তান বিক্রি করলে ৫০ হাজারের বেশি টাকা পাওয়া যায়। গতবার ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলাম। এবার ৬০ হাজার টাকা পেলে বিক্রি করবো।

Advertisement

সন্তান পেটে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে কষ্ট হয় কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কষ্ট তো হয়-ই। রাস্তায় না দাঁড়ালে খাব কী? আবার একসঙ্গে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকাও তো কম নয়।’

রেশমার বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকায়। কৈশোরের সীমা না পেরুতেই এক আত্মীয়ের মাধ্যমে রাজধানীতে আসেন অন্যের বাসায় কাজের বুয়া হিসেবে। ভালোই কাটছিল কিশোরীর। কিন্তু ভাগ্য বিড়ম্বনায় সে সুখ স্থায়ী হয়নি এই অসহায় নারীর। বাসার মালিক বিদেশ চলে যাওয়ার পরে ছন্দপতন ঘটে তার জীবনে।

পাশের বাসার আরেক বুয়ার সঙ্গে পরিচয় হয়েই জীবনের স্রোত বিপরীত মুখে প্রবাহিত হয় রেশমার। ১৪ বছর বয়স থেকেই ফার্মগেটের হোটেলে দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রায় ১৩ বছর ধরে রয়েছেন এ পেশায়। আলোর পথে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন কয়েকবার। তীর পাননি। শরীর আর রূপে ভাটা পড়ার পর ছাড়তে হয়েছে হোটেল আঙ্গিনা। এখন রাস্তায়ই ব্যবসা রেশমার।

এএসএস/জেএইচ/আরআইপি

Advertisement