খেলাধুলা

ইমরুল-মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ

টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতির মিছিলে টানা তৃতীয় ম্যাচে অল্পতেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল বাংলাদেশের। মাত্র ৮৭ রানেই সাজঘরে ফিরে যান প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাঁটা পড়েন দলের সেরা দুই ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। ভর করেছিল অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার ভয়।

Advertisement

সব ভয়কে জয় করে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১২৮ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। দুজনই হাঁকান নিজেদের ব্যক্তিগত অর্ধশত। তাদের ফিফটিতে ভর করে শেষ পর্যন্ত নিজেদের নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রানে থামে বাংলাদেশের সংগ্রহ। ম্যাচ জিততে আফগানিস্তানকে করতে হবে ২৫০ রান।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে আগের তিন ম্যাচের ব্যর্থতা মাথায় রেখে এ ম্যাচে ধীরে সুস্থে শুরু করেন লিটন ও শান্ত। কিন্তু বেশিক্ষণ ধৈর্য্য ধরতে রাখতে পারেননি শান্ত। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে আফতাব আলমের বোলিংয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন রহমত শাহ'র হাতে। ফেরেন ব্যক্তিগত ৬ রানে।

পরের ওভারেই সাজঘরে ফেরেন প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও। মুজিব উর রহমানের ভেতরে ঢোকা বলে বেশ দেরি করে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন লেগ বিফোরের ফাঁদে। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র এক রান।

Advertisement

আগের তিন ম্যাচেই ব্যর্থতার বৃত্তে আবদ্ধ থাকা লিটন এ ম্যাচে শুরুটা করেছিলেন দুর্দান্ত। উইকেটের চার পাশে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছুটিয়ে মাত্র ৪২ বলে ৪১ রান করে ফেলেছিলেন লিটন। রশিদ খান প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসতেই ওভারের তৃতীয় বলে এক্সট্রা কভার দিয়ে দৃষ্টিনন্দন চার মারেন তিনি।

লোভ সামলাতে না পেরে পরের বলে খেলতে যান সুইপ শট। কিন্তু টপ এজ হয়ে ধরা পড়েন এহসানউল্লাহ জান্নাতের হাতে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ৪১ রানের সাজঘরে ফিরে যান তিনি। এক বল পড়েই মুশফিকের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয় সাকিবের। সরাসরি থ্রোতে তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান সামিউল্লাহ শেনওয়ারি।

এক ওভার পরে আবার আক্রমণে আসেন রশিদ খান। এবার ভুল বোঝাবুঝির স্বীকার হন মুশফিকুর রহিম। ইমরুল কায়েসের ডাকে উইকেটের প্রায় মাঝপথে চলে যান মুশফিক। কিন্তু ইমরুল তাকে ফিরিয়ে দিলে আর ফিরতে পারেননি নিজের ক্রিজে। ফিরে যান ব্যক্তিগত ৩৩ রানের মাথায়।

উনিশতম ওভারে রশিদ খান প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসার সময় সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশ দলের পতনের বার্তা। তার প্রথম ওভারেই ফিরে যান লিটন কুমার দাশ, একই ওভারে রানআউট হন সাকিব আল হাসান। রশিদের পরের ওভারে আবারও রানআউটে কাঁটা পড়েন মুশফিকুর রহিম।

Advertisement

১৮ ওভারে ২ উইকেটে ৭৬ থেকে ২১ ওভারে ৫ উইকেটে ৮৭ রান হয়ে যায় বাংলাদেশের সংগ্রহ। চোখরাঙানি দিতে থাকে অল্প রানের গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। সেখান থেকে জুটি গড়ে বাংলাদেশ ইনিংসকে কক্ষে আনেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইমরুল কায়েস। যেই রশিদের ওভারে শুরু পতনের, সে রশিদকেই বিশাল ছক্কা মেরে ষষ্ঠ উইকেট জুটির শতরান পূরণ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

জুটির শতকের পর বোলারদের উপর চড়াও হতে শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। রশিদের পরের ওভারে হাঁকান আরও একটি ছক্কা। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। আফতাব আলমের বোলিংয়ে ডিপ স্কয়ার দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েন রশিদ খানের হাতে। শেষ হয় ৮১ বলে ৭৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস। তিন চার ও দুই ছক্কার মারে নিজের ইনিংস সাজান তিনি।

মাহমুদউল্লাহ ফিরে যাওয়ার পরে ৯ বলে ১০ রানের ছোট্ট ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। শেষদিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৪ বলে ৫ রানের ইনিংস। প্রায় ১১ মাস পরে ওয়ানডে দলে ফিরে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশত তুলে নেন ইমরুল কায়েস। ৭৭ বলে পূরণ করেন নিজের অর্ধশত। শেষ পর্যন্ত ৮৯ বলে ৭২ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ছয়টি বাউন্ডারির মারে সাজান নিজের ইনিংস।

আফগানিস্তানের পক্ষে আফতাব আলম একাই নেন তিন উইকেট। এছাড়া রশিদ খান ও মুজিব উর রহমান নেন ১টি করে উইকেট।

এসএএস/আরআইপি