জাতীয়

গুলিস্তানে ৭ বস্তা ভেজাল ওষুধ জব্দ

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ভ্রাম্যমাণ আদালত বুধবার রাজধানীর গুলিস্তান পাতাল মার্কেট সংলগ্ন ফুটপাতে অভিযান চালিয়ে সাত বস্তা নকল, ভেজাল, মিসব্রান্ডেড, ক্ষতিকর ও অনুমোদনহীন ওষুধ জব্দ করেছে। ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া এক শ্রেণির প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন ধরনের ওষুধ যৌন উত্তেজক, যৌন শক্তিবর্ধক ও ব্যথানাশক এবং এনার্জি ড্রিঙ্ক বিক্রি করে আসছিল।র‌্যাব-২ এর কোম্পানি কমান্ডার ড. দিদারুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বুধবার দুপুরে ফুটপাতের সাত কথিত ওষুধ ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। এরা হলেন- ওসমান গণি, অজিত কুমার রায়, মো. আকাশ মোল্লা, মো. অহিদ, মো. মিন্টু আলী, আবুল কাশেম ও মো. মুরাদ।ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন সাত আসামিকে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। জানা গেছে আটক সাত আসামির ছয়জন জরিমানার টাকা পরিশোধ করে তাৎক্ষণিকভাবে ছাড়া পান।প্রশাসন অধিদফতরের ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক সৈকত কুমার কর ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাত জনকে আসামি করে পৃথক সাতটি মামলা দায়ের করেন। ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক সৈকত কুমার কর জাগো নিউজকে বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন ব্যস্ততম বাসস্ট্যান্ড- গুলিস্তান, ফার্মগেট, মহাখালী ও গাবতলী এলাকার ফুটপাতে এক শ্রেণির প্রতারকচক্র সাধারণ মানুষকে মিষ্টি কথায় ভুলিয়ে দীর্ঘদিন যাবত নকল, ভেজাল ও ক্ষতিকর ওষুধ বিক্রি করে আসছিল।গত কয়েকদিন তারা সরেজমিন ঘুরে এর সত্যতা খুঁজে পেয়ে বুধবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানটি চালায়। তিনি জানান, যৌন উত্তেজক ওষুধ মানহীন হলেও প্রতারক ব্যবসায়ীরা একটি ট্যাবলেট ৩০ থেকে ৪০ টাকা মূল্যে বিক্রি করতো।আটককৃতরা জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ব্রোকাররা কমিশনে তাদের বিক্রির জন্য এসব ওষুধ দিয়ে যেতো।অভিযানকালে আটককৃত ওষুধের মধ্যে রয়েছে- প্রোভিট-টেন (শক্তিবর্ধক), হেলদি ম্যান (যৌন উত্তেজক), গুডম্যান (যৌন উত্তেজক), নিউ পাওয়ার অয়েল (যৌন উত্তেজক), পাওয়ার প্লাস (যৌন শক্তি বর্ধক), ডায়বা ডাস্ট (ডায়াবেটিস), সান্ডার তৈল (যৌন উত্তেজক), ম্যান জেল (যৌন উত্তেজক), ডি-ভিট গোল্ড (শক্তিবর্ধক), ম্যাক্সম্যান জেল (যৌন শক্তি বর্ধক), প্রোটিন প্লাস (এনার্জি ড্রিংক), সুপার লায়ন পাওয়ার ডিলে স্প্রে (যৌন শক্তি বর্ধক), ম্যাক্সম্যান ডিলে স্প্রে ফর ম্যান (যৌন শক্তি বর্ধক), ম্যাগনেট পাওয়ার-এম (যৌন উত্তেজক), সঞ্জীবনী রসায়ন (শক্তিবর্ধক), টাইগার অয়েল (যৌন শক্তি বর্ধক), এনার্জি শক্তি হারবাল (যৌন শক্তি বর্ধক), ম্যান পাওয়ার (যৌন শক্তি বর্ধক), পেইন কিলার স্প্রে (ব্যথানাশক), কারেন্ট পাওয়ার (স্নায়ু শক্তিবর্ধক), সেক্স অয়েল (যৌন শক্তি বর্ধক), জিনসিন (যৌন শক্তি বর্ধক)।ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন- নকল, ভেজাল, মিসব্রান্ডেড, ক্ষতিকর ও অনুমোদনবিহীন যৌন উত্তেজক, যৌন শক্তিবদ্ধক, ব্যথা নাশক ওষুধ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত এ ধরণের ওষুধ সেবন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

Advertisement

দীর্ঘদিন ধরে এ ধরণের মানহীন ওষুধ সেবনের কারণে রোগীদের কিডনি, পাকস্থলি ও লিভারের কার্যকারিতায় ব্যঘাত সৃষ্টি হতে পারে। জনসাধারণের কোনভাবেই ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত রাস্তাঘাট, ফুটপাত ও যেখান-সেখান থেকে কোন ধরণের ওষুধ ক্রয় করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তারা।পর্যায়ক্রমে রাজধানীর বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের অভিযান চলবে বলে তারা জানান।এমইউ/এসএইচএস/আরআইপি