বেনাপোল বন্দরে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাক চালকদের সঙ্গে বন্দরের কয়েকটি সংগঠনের সদস্যদের বকশিশের নামে হয়রানি ও দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
Advertisement
শনিবার দুপুর থেকে ভারতীয় ট্রাক শ্রমিক সংগঠন এবং মালিক সমিতি বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।
ফলে ভারত থেকে কোনো পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি এবং বেনাপোল বন্দর থেকে কোনো পণ্য ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে যায়নি। আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকা পড়েছে শত শত পণ্যবোঝাই ট্রাক। যার অধিকাংশে রয়েছে বাংলাদেশে রফতানিমুখী গার্মেন্ট শিল্পের কাঁচামাল, মাছ, পানসহ বিভিন্ন ধরনের পচনশীল পণ্য। তবে আমাদানি-রফতানি বন্ধ থাকলে বেনাপোল বন্দরে খালাস প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রয়েছে। কাস্টমসেও কাজ চলছে স্বাভাবিকভাবে।
ভারতীয় ট্রাক শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে রফতানিকৃত পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসার পর তাদের ওপর শুরু হয় নানা হয়রানিসহ দুর্ব্যবহার। নিয়ম মাফিক বকশিশের টাকা দিলেও তারা অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করে আসছে। এসব জটিলতা নিরসনে দুই দেশের বিভিন্ন সংগঠেনের সমন্বয়ে সম্প্রতি দুটি আলোচনা সভা বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
সভায় সিদ্ধান্ত হয় ট্রাক বিশেষ বকশিশের হার। কিন্তু বেনাপোল বন্দরের কতিপয় সংগঠনের সদস্যরা এসব সিদ্ধান্ত না মেনে ইচ্ছা মাফিক বকশিশের টাকা আদায়ের ব্যাপারে অনড় থাকায় আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ট্রাক শ্রমিক ও মালিকদের সংগঠনগুলো। ফলে আজো বেনাপোলের বিপরীতে পেট্রাপোল বন্দরে হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে মাইক লাগিয়ে সমাবেশ করেন ট্রাক শ্রমিকরা।
বেনাপোল চেকপোস্ট সূত্রে জানা যায়, পেট্রাপোল বন্দরের কিছু ট্রাক মালিক ও শ্রমিক নেতারা পরিকল্পিতভাবে বেনাপোলে পণ্যজট দেখিয়ে একটি সিন্ডিকেট করে ট্রাকের ডেমারেজ বাবদ প্রতিদিন এক হাজার থেকে ১৫শ টাকা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করত।
ফলে এক একটি ট্রাক পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে পৌঁছাতে সময় লাগত ১৫ থেকে ২০ দিন। বর্তমানে বেনাপোল বন্দরে কোনো পণ্যজট না থাকায় প্রতিদিনের ট্রাক প্রতিদিন প্রবেশ করছে সে কারণে ভারতীয় ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরা কোনো ডেমারেজ পাচ্ছে না। ফলে আবারও নানাভাবে তুচ্ছ ঘটনায় আমদানি-রফতানি বন্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে তারা। যাতে আমদানি-রফতানি বন্ধ রেখে ডেমারেজ আদায় করা যায়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ নুরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। শনিবার বেনাপোল বন্দরের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। আশা করি আলোচনা সফল হবে এবং আমদানি-রফতানি কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।
Advertisement
এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের শ্রমিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে শনিবার দুপুর থেকে এ পথে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। বাণিজ্য সচল করতে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। খুব দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
জামাল হোসেন/এএম/জেআইএম