১, ১৫ ও ১৫- এশিয়া কাপের প্রথম তিন ম্যাচে বাংলাদেশ দলের উদ্বোধনী জুটির রান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরেছিলেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাশ, সে ম্যাচেই হাতের ইনজুরিতে পুরো টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গেছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।
Advertisement
তামিম ছিটকে যাওয়ার পর বড্ড ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে বাংলাদেশ দলের ওপেনিং জুটি। অভিষিক্ত নাজমুল হোসেন শান্ত ও মাত্র ১৩ ম্যাচের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লিটনের কাঁধে পড়ে ইনিংস সূচনা করার দায়িত্ব। কিন্তু দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হন শান্ত ও লিটন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দলীয় ১৫ রানের মাথায় ফেরেন শান্ত, ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে একই রানে ফেরেন লিটন দাশ।
ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই জরুরি নোটিশে শনিবার রাতে দেশ থেকে উড়িয়ে নেয়া হয় দুই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসকে। দলের অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা ও সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বোধগম্য হয়নি হুট করে কেন দুই ওপেনারকে ডাকা হলো দেশ থেকে।
তবে ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক প্যানেল ও উচ্চপদস্থ পরিচালকদের ভাষ্যে জানা গেছে উদ্বোধনী জুটির টালমাটাল অবস্থা সামাল দিতেই তুলনামূলক অভিজ্ঞ ইমরুল ও সৌম্যকে নেয়া হয়েছে আরব আমিরাতে। রোববার বেলা সাড়ে পাঁচটায় টুর্নামেন্টে নিজেদের ‘মহা গুরুত্বপূর্ণ’ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
Advertisement
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আফগান স্পিনারদের কাছে ধরাশায়ী হওয়া বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে সুপার ফোরের ম্যাচটিতে। নতুবা আগের ম্যাচের পারফরম্যান্স ধরে রেখে পরাজিত দলে থেকেই মাঠ ছাড়লে শেষ হয়ে যেতে পারে ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা। টানা দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলার আশা বাচিয়ে রাখতে এই ম্যাচের জয় অনেকখানি এগিয়ে দেবে বাংলাদেশকে।
এই ম্যাচের আগে সদ্য যোগ দেয়া ওপেনারের অন্তর্ভুক্তিতে বেশ চিন্তায়ই পড়তে হবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। ফর্মে নেই লিটন দাশ, অনভিজ্ঞ নাজমুল শান্তও প্রথম দুই ম্যাচে দেখাতে পারেননি প্রতিভার ঝলক। তাই দুই ওপেনারের একজনকে যে বাদ দেয়াই হবে তা একপ্রকার নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে এ যাত্রায় বেঁচে যেতে পারেন ডানহাতি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাশ।
স্কোয়াডে সদ্য যোগ দেয়া দুই ওপেনার ইমরুল ও সৌম্য দুজনই বাঁহাতি হওয়ায় , আরেক বাঁহাতি নাজমুল শান্তর বদলেই ডাক পেতে পারেন ইমরুল বা সৌম্য। এছাড়াও তিন নম্বরে আরেক বাঁহাতি সাকিব আল হাসান থাকায় একাধারে তিন বাঁহাতি নামিয়ে দেয়ার ঝুঁকি নেবে না দল।
তাই নাজমুল শান্তর পরিবর্তেই ডাক পাবেন সৌম্য বা ইমরুল। এক্ষেত্রে দলে ঢোকার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন মারকুটে ওপেনার সৌম্য সরকার। নিদাহাস ট্রফিতে তার ডানহাতি মিডিয়াম পেস বোলিংটাও প্রমাণ হয়েছিল বেশ কার্যকর হিসেবে। আর ফিটনেসের দিক দিয়েও ইমরুলের চেয়ে এগিয়ে সৌম্য। আরব আমিরাতের অত্যধিক গরমে হুট করেই ভ্রমণ করে মাঠে নামাটা বেশ কষ্টসাধ্যই ইমরুলের জন্য। তাই শান্তর পরিবর্তে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে দেখা যেতে পারে সৌম্য সরকারকেই।
Advertisement
দলে আর কোনো পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। তবে তিন ম্যাচেই ব্যাট হাতে চূড়ান্ত ব্যর্থতার প্রমাণ দেয়া মোসাদ্দেক হোসেনের সৈকতের পরিবর্তে পেস বোলিং অলরাউন্ডার আরিফুল হকের ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা। এক্ষেত্রে আবার সৌম্যের অন্তর্ভুক্তি পিছিয়ে দিতে পারে আরিফুলকে। এছাড়া গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে অফস্পিন বোলিংয়ে ৪ ওভার করে মাত্র ১৮ রান দিয়েছিলেন সৈকত। সে বিবেচনাতেও আজকের ম্যাচে দলে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
সবমিলিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের সম্ভাব্য একাদশ : লিটন কুমার দাশ, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।
এসএএস/পিআর