শিশু অপহরণ, ধর্ষণ ও পতিতালয়ে বিক্রির মামলায় একজন আসামিকে যাবজ্জীবন, এক নারীসহ তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থ দণ্ডাদেশ প্রদান করেছেন গাইবান্ধার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ এর আদালত। বুধবার দুপুরে আদালতের বিচারক অম্লান কুসুম জিষ্ণু এ রায় প্রদান করেন।মামলার বিবরণে জানা যায়, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দক্ষিণ চকদড়িয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের ১২ বছরের মেয়ে মল্লিকাকে ১৯৯৪ সালের ৬ জুন অপহরণ কর। এরপর আসামিরা তাকে ধর্ষণ করেন। পরে মল্লিকাকে লালমনিরহাটে একটি পতিতালয়ে সর্দারনী পারভিনের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে মল্লিকাকে লালমনিরহাটের পতিতালয়ের সর্দারনী পারভিনের কাছ থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে সর্দারনী পারভিন বেগমসহ ছয়জনকে আসামি করে সাদুল্যাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মো. আব্দুল মান্নান, শহিদুল ইসলাম, মোছাদেকুর রহমান, মিন্টু মিয়া ও অষিক চন্দ্র মণ্ডল। আসামিদের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ও লালমনিরহাট জেলায়। এ মামলায় দশজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গাইবান্ধার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন (নিবর্তক শাস্তি) অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ৫ ধারার অপরাধে মো. আব্দুল মান্নানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। শহিদুল ইসলাম ও মোছাদেকুর রহমানকে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্দারনী পারভিন বেগমকে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণে দোষি সাব্যস্ত না হওয়ায় আসামি মিন্টু মিয়া ও অষিক চন্দ্র মণ্ডলকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ওবায়দুর রহমান এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাড. সৈয়দ শামস-উল হীরু।ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ওবায়দুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, একজন শিশুকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর পতিতালয়ে বিক্রির মতো জঘন্য আর কোনো ঘটনা হতে পারে না। আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যে রায় প্রদান করেছেন তাতে সমাজের আর কোনো মানুষ এমন জঘন্য ঘটনার প্রতি উৎসাহিত হবেন না বলে আশা করি। অমিত দাশ/এমজেড/পিআর
Advertisement