দেশজুড়ে

ঘটনা ফাঁস হলে নাম কেটে দিমু

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা অগ্রণী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ১০৮ জন বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীর ভাতার টাকা থেকে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা করে কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে অগ্রণী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখা থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় এ অভিযোগ করেন ভাতাভোগীরা। তাদের অভিযোগ, মেম্বার ও চেয়ারম্যান মিলে এসব টাকা ভাগ করে নিয়েছেন।

ভাতাভোগীরা বলেন, অগ্রণী ব্যাংকের লোহাগড়া শাখার ক্যাশিয়ার শেখ জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম কালু, ইউপি সদস্য মোহাম্মাদ মোল্লা, শিবানী রানী বিশ্বাস, মোস্তাক আহম্মদ নাইসসহ বেশ কয়েকজন আমাদের ভাতা থেকে মোট ১ লাখ ৮ হাজার টাকা কেটে নিয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মোট ১০৮ জনকে অগ্রণী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখা থেকে শুক্রবার বন্ধের দিনে টাকা বিতরণ করা হয়। অগ্রণী ব্যাংকের লোহাগড়া শাখা থেকে টাকা দেয়া শুরু হলে অভিযুক্তরা যোগসাজশে ভাতাভোগীদের চেক বইয়ের পাতায় টিপসই নিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ থেকে ১ হাজার করে টাকা কেটে নেন।

Advertisement

ইউনিয়নের রায়গ্রামের রামকৃষ্ণ, বিষ্ণপদ বাগচিসহ ভুক্তভোগীরা জানান, বয়স্ক ও বিধবাদের ৬ হাজার টাকার পরিবর্তে দেয়া হয় ৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের ৮ হাজার ৪০০ টাকার স্থলে দেয়া হয় ৭ হাজার ৪০০ টাকা। টাকা কেটে নেয়ার বিষয়টি ফাঁস হলে পরবর্তীতে তাদের ভাতা থেকে বাদ দেয়া হবে বলেও হুমকি দেন জনপ্রতিনিধিরা। সেই সঙ্গে মেম্বার ও চেয়ারম্যান বলেন, ঘটনা ফাঁস হলে তালিকা থেকে নাম কেটে দিমু।

টাকা কম দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম কালু, ইউপি সদস্য মোহাম্মাদ মোল্যা ও ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি অস্বীকার করেন।

লোহাগড়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শামীম রেজা বলেন, ভাতাভোগীরা ব্যাংক হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করবেন। সমাজসেবা অফিসের নামে কেউ টাকা নিলে এবং এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অগ্রণী ব্যাংক লোহাগড়া বাজার শাখার ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন বলেন, ভাতাভোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় বন্ধের দিনে ভাতার টাকা দেয়া হয়েছে। তবে কোনো ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভাতার টাকা কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Advertisement

এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, টাকা কেটে নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

হাফিজুল নিলু/এএম/আরআইপি