পুরো বিশ্বের লাখ লাখ শিয়া মুসলিম শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে মররমের ১০ তারিখ। শুধু মাত্র শিয়া মুসলিমরাই তাজিয়া মিছিল বের করে এমন নয়। ভারতের একদল ব্রাহ্মণও মহররমে দিনে শোভাযাত্রা বের করেন। তারা হুসেনি বাহ্মণ নামে পরিচিত। ভারতের উত্তর পশ্চিম দিকে এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন এই বিশেষ গোষ্ঠীর মানুষেরা।
Advertisement
ইসলামি বছরের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছিলেন শেষ নবী হযরত মুহাম্মদের (সাঃ) প্রিয় দৌহিত্র ঈমাম হুসাইন। তখন থেকেই প্রতিবছর এই দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করছেন শিয়া মুসলিমরা।
কিছু ইতিহাস এবং লোককথাকে ভিত্তি করে এই হুসেনি ব্রাহ্মণদের উৎপত্তি নিয়ে রয়েছে নানা রকম প্রচলিত কাহিনী। এখনও রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাবে বেশ কিছু হুসেনি ব্রাহ্মণ বাস করেন। পাশাপাশি প্রতিবেশী পাকিস্তানের সিন্ধুপ্রদেশ ও পাঞ্জাবেও রয়েছেন তারা।
তাছাড়া এমন কিছু পরিবারের বাস এখনও আরবে রয়েছে। কারবালার ঘটনার অনেক আগে বড় সংখ্যক হিন্দু বাস করতেন আরবে। প্রচলিত মতে, হুসেনি ব্রাহ্মণদের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাহাব সিধু দত্ত। এই রাহাব দত্ত আরবে যাওয়ায় তার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ইমাম হুসেনের।
Advertisement
কারবালার ঘটনার সময় বাগদাদে ১৪শ ব্রাহ্মণ পরিবার বাস করতেন। ওই যুদ্ধে তারাও হুসেনের পক্ষে যোগ দিয়ে লড়েছিলেন বলে কথিত আছে। অনুমান করা হয়, এই পরিবারগুলোই আদি হুসেনি ব্রাহ্মণ। ৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে এরা ভারতে এসে শিয়ালকোটের দিনানগর আর রাজস্থানের পুষ্করে বসবাস শুরু করেন।
এখনও এদের ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইমাম হুসেন ও তার বংশ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। খুব গর্বের সঙ্গে এরা স্মরণ করেন সেই জড়িয়ে থাকাকে। অনেকে আবার কারবালা যুদ্ধে তাদের পূর্বপুরুষদের আত্মদানের স্মৃতিতে গলায় একটি কাটা দাগ তৈরি করে থাকেন।
এই বিশেষ গোষ্ঠীর অতি পরিচিত মুখ হলেন চিত্রতারকা সুনীল দত্তের পরিবার। সেনাবাহিনীর বেশ বড় একটা অংশেও এই সম্প্রদায়ের মানুষের দেখা মেলে। আবার পাঞ্জাব, গুজরাট বা মহারাষ্ট্রের চারণ গানে হিন্দুদের কারবালার যুদ্ধে আত্মদানের কথা এখনও শোনা যায়। শোনা যায় সিন্ধুপ্রদেশের লোকগানে।
টিটিএন/এমএস
Advertisement