গেল সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের (১৬ থেকে ২০ সেপ্টেম্বর) মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন হয়েছে। এমন দরপতনের কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বাজার মূলধন হারিয়েছে তিন হাজার কোটি টাকার উপরে। এ নিয়ে টানা দুই সপ্তাহের পতনে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন হারালো ডিএসই।
Advertisement
বড় অঙ্কের বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গেল সপ্তাহজুড়েই ডিএসইর সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়। সেই সঙ্গে কমে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। পাশাপাশি কমে লেনদেনের পরিমাণ।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮২১ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজারটির বাজার মূলধন কমে ৩ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে টানা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৩ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৬১ শতাংশ। এর আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৭৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
Advertisement
অপর দুটি সূচকের মধ্যে গত সপ্তাহে ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ১৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৩৮ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ১৫ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৭ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ।
গেল সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৪১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে ১০৬টির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। অপরদিকে দাম কমেছে ২২০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির দাম।
এদিকে সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয় ৭৭৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯০১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বা ১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ।
Advertisement
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৪ হাজার ৫০৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৬২২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বা ১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৯০ দশমিক ৩৪ শতাংশই ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দখলে। এ ছাড়া বাকি ৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের এবং ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয় খুলনা পাওয়ার কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিটির ৪০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ১৫৫ কোটি ৫৭ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইফাদ অটোস।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- বিবিএস কেবলস, শাশা ডেনিম, আমান ফিড, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, সিঙ্গার বাংলাদেশ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এবং সায়হাম টেক্সটাইল।
এমএএস/জেডএ/পিআর