নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম আক্তারের (১৫) শোয়ার ঘরের মেঝে রক্ত, পায়ের নূপুর, দুই টুকরা মাংস, রক্তমাখা দুটি ছুরি এবং একটি জবাই করা রাজহাঁস উদ্ধার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
Advertisement
সেই সঙ্গে মরিয়ম আক্তারের মা নুরজাহান (৪০), বড় বোন রেশমা (১৯) এবং তার স্বামী মাঈনুল ইসলামকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার মহিপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
রাতভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে মরিয়ম আক্তারের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন। মরিয়মের বাসায় বুধবার থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মহিপুর থানার কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজ সংলগ্ন মৃত বাবুল মল্লিকের বাড়িতে বুধবার ভোরে মরিয়ম আক্তারের শোয়ার ঘরের মেঝে রক্ত, পায়ের নূপুর, দুই টুকরা মাংস, রক্তমাখা ছুরি পাওয়া গেলেও মরিয়মকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Advertisement
বুধবার এ ঘটনার থেকে মহিপুর থানা পুলিশ, পটুয়াখালী জেলা পুলিশ, সিআইডি, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং তদন্ত করছেন।
এ ব্যাপারে মহিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মাহবুবুর রহমান বলেন, মরিয়ম আক্তারের কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। তার ঘর থেকে রক্ত, ছুরি, নূপুর এবং একটি রাজাহাঁসসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে বিষয়টি রহস্যজনক।
গত মঙ্গলবার রাতের খাবার খেয়ে মৃত বাবুল মল্লিকের স্ত্রী নুরজাহান ও শিশুপুত্র হামিম (৩) এবং মেয়ে মরিয়ম এক খাটে ঘুমায়। ওই ঘরের দোতলায় নুরজাহানের বড় মেয়ে রেশমা (১৯) তার স্বামী মাঈনুল ইসলাম ঘুমিয়ে ছিল। রাত ৩টার দিকে রেশমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বাইরে নেমে আবার ঘরে ওঠার সময় বোন মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে ঘুমাতে যায়। এরপর ভোরে মরিয়মকে না পাওয়া এবং ঘরের বিভিন্ন জায়গা রক্ত দেখে মা নুরজাহান বেগমের চিৎকারে ঘরের সবার ঘুম ভেঙে যায়।
লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনসার মোল্লা বলেন, এখন পর্যন্ত মরিয়ম আক্তারের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে জবাই করা একটি রাজাহাঁস রহিম জোমাদ্দারের জলাশয় থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরিয়ম নিখোঁজ এবং জবাই করা রাজাহাঁসের বুক থেকে দুই টুকরা মাংস নেয়া ও অন্যান্য আলামত দেখে অনেক রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশের একাধিক টিম।
Advertisement
এদিকে স্থানীয়রা জানায়, প্রেমঘটিত কারণে পালিয়ে যাওয়াকে নিরাপদ করতে রাজাহাঁস জবাই করে দুই টুকরা মাংস ও রক্ত ঘরের বিভিন্ন স্থানে ছিটিয়ে এবং মাথার চুল, পায়ের নূপুর ইত্যাদি দেখিয়ে প্রকৃত ঘটনা আড়ালের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি জবাই করা রাজাহাঁসটিও তাদের নিজস্ব। সত্য ঘটনা বের হলে তা হবে এই অঞ্চলের একটি ভয়াবহ স্মৃতিময় ঘটনা।
এএম/জেআইএম