মহররম মাস অত্যন্ত সম্মানিত মাস। কুরআনুল কারিমে যে ৪টি মাসকে হারাম মাস বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তার একটি মহররম। তাই এ মাসের ইবাদত-বন্দেগিতে রোজা রাখার গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বেশি। কেননা তা পালনে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন।
Advertisement
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ)
আশুরার রোজার ফজিলতই মানুষকে এ মাসে রোজা রাখতে বেশি উদ্বুদ্ধ করে। কারণ এ মাসের রোজা রাখার ফজিলত বর্ণনায় হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি আশা রাখি যে, আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গোনাহের কাফ্ফারা হবে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
Advertisement
অন্য হাদিসে এসেছে-হজরত কাতাদাহ আল-আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আরাফার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আরাফার দিনের রোজা বিগত এক বছর এবং আগামী এক বছরের গোনাহের কাফ্ফারা আর আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গোনাহের কাফ্ফারা হবে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম শত্রুর কবল থেকে রক্ষা পেয়ে শুকরিয়া আদায় করে রোজা রেখেছিলেন এ দিন। যা মদিনার ইয়াহুদিরাও পালন করতেন। সে আশুরার রোজার মর্যাদা সম্পর্কে প্রিয়নবির ঘোষণাটি ছিল এমন-হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমন করে দেখলেন, ইয়াহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিসের রোজা? তারা বলল, এটা একটা উত্তম দিন। এদিন আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইল জাতিকে তাদের দুশমনের (ফেরাউন) কবল থেকে নাজাত দিয়েছেন। তাই মুসা আলাইহিস সালাম এ দিন রোজা রেখেছিলেন।
তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমাদের চেয়ে আমি মুসা (আলাইহিস সালাম)-এর (আদর্শ অনুসরণে) অধিক হকদার। কাজেই তিনি (প্রিয়নবি) নিজেও রোজা রাখলেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও রোজা রাখার আদেশ দিলেন।’ (বুখারি, মুসলিম, ইবনে মাজাহ আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
আশুরার রোজা মর্যাদার বিষয়টি তুলে ধরে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরবর্তী বছর বেঁচে থাকলে যেভাবে রোজা পালন করবেন তার জোর তাগিদ দিয়ে বর্ণনা করেন। ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি এবং আমাকে আল্লাহ তাআলা বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে আমি অবশ্যই অবশ্যই অবশ্যই মহররমের ৯ ও ১০ তারিখ রোজা রাখব।’ (বুখারি)
Advertisement
এখন চলছে মহররম মাস। এ মাসের রোজার নির্দেশ দিয়েছেন সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত এ মাসের ৯ ও ১০ তারিখ রোজা রাখব। যদি কেউ ৯ তারিখ রোজা রাখতেও না পারে তবে ১০ তারিখসহ ১১ তারিখ রোজা পালন করা জরুরি। আর যদি কেউ শুধু ১০ তারিখও রোজা রাখে তবে সে ব্যক্তিও হাদিসে ঘোষিত ফজিলত লাভ করবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মহররমের রোজা পালন করে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশের বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম