খেলাধুলা

একজন পাগলও এই সূচি দেখে অবাক হবে : মাশরাফি

সব পরিকল্পনাই ঠিক করা ছিল বাংলাদেশ দলের। প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে পারলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। সুতরাং, সুপার ফোরে বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রুপের রানারআপ দলের বিপক্ষে। কিন্তু এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সেই পরিকল্পনায় পুরোপুরি পানি ঢেলে দিয়েছে। গ্রুপ পর্বের দুটি ম্যাচ বাকি থাকতেই সুপার ফোরের সূচি নির্ধারণ করে ফেলে এসিসি। মঙ্গলবার রাতে সেই সূচি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে এসিসি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ভারতকে সুবিধা দিয়ে সূচি পুরোপুরি পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে।

Advertisement

পরিবর্তিত সূচিতে দেখা যাচ্ছে, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতলেও থেকে যাচ্ছে গ্রুপ রানারআপ। কারণ, পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে দুবাইতে। যেখানে মুখোমুখি হবে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং গ্রুপ ‘বি’ রানারআপ। কিন্তু এসিসি আগেই নির্ধারণ করে ফেলেছে, দুবাইতে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত এবং বাংলাদেশ।

দুবাইতে সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ খেলতে হলে বাংলাদেশের জন্য সেটা হয়ে যাবে খুবেই কঠিন। কারণ, ২০ সেপ্টেম্বর আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দিবারাত্রির ম্যাচটি শেষ করেই বাংলাদেশ দলকে ছুটতে হবে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে। সেখানে এসে পরদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় আবার নেমে পড়তে হবে মাঠে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রায় দুই শহরে পরপর দুইদিন দুটি ম্যাচ খেলা রীতিমত অসম্ভব একটি ব্যাপার। অথচ, এসিসি পূনঃনির্ধারিত সূচি অনুসারে এটাই এখন বাংলাদেশের জন্য বাস্তবতা।

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এসিসি নতুন সূচি নিয়ে বেশ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি সরাসরি বলে দিয়েছেন, ‘এটা খুবই হতাশাজনক।’ বুধবার দুবাইর আইসিসি একাডেমিতে অনুশীলনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

Advertisement

মাশরাফি পরিবর্তিত সূচি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করতে গিয়ে সরাসরি বলে দিলেন, ‘এমনকি একজন পাগলও এই বিষয়টাতে অবাক না হয়ে পারবে না।’ তিনি জানিয়ে দিলেন, পুরো দলই এ নিয়ে খুব হতাশ।

আবুধাবিতে একটি ম্যাচ খেলে পরদিনেই আবার দুবাইতে গিয়ে খেলতে হবে। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা যেখানে রীতিমত উত্তাপ ছড়াচ্ছে। তবে ক্রিকেটারদের হতাশার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, আগে থেকেই বাংলাদেশকে গ্রুপ ‘বি’র রানারআপ নির্ধারণ করে ফেলা। অথচ, আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখনও মাঠেই নামেনি বাংলাদেশ।

মাশরাফি বলেন, ‘সূচি যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ হয়েছে গ্রুপ রানারআপ। অথচ এখনও আমরা শেষ ম্যাচটি খেলিইনি। এটা খুবই হতাশাজনক।’

বাংলাদেশ যে একটা পরিকল্পনা নিয়ে এশিয়া কাপ খেলছে, সেই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভেস্তে দিয়েছে এই নতুন সূচি। মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা রয়েছে। যেটাকে সামনে নিয়ে আমরা এশিয়া কাপে খেলছি। আমাদের পরিকল্পনায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলবো এবং গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার ফোরে খেলবো এ গ্রুপের রানারআপ দলের বিপক্ষে। কিন্তু আজ সকালে এসে শুনলাম, আমাদেরকে ইতোমধ্যেই গ্রুপ রানারআপ করে দেয়া হয়েছে। শেষ ম্যাচে জয়-পরাজয়ছাড়াই।’

Advertisement

তবুও খেলতে হবে এবং দেশের জন্য সর্বোচ্চটা দিয়ে খেলবেন বলেন জানান মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘তবুও আমাদের খেলতে হবে। অবশ্যই, এটাও অন্য আট-দশটা আন্তর্জাতিক ম্যাচের মত আমাদের কাছে। যেখানে আমরা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করি। তবে, আপনি যখনই সুপার ফোর কিংবা গ্রুপ পর্বের ম্যাচের কথা বলতে যাবেন- সেখানে অবশ্যই একটা নিয়ম-নীতি থাকতে হবে। যেটা দিয়ে টুর্নামেন্টটা পরিচালিত হবে। অথচ আমরা নিয়ম-নীতি থেকে সরে এসেছি। এটা সত্যিই হতাশাজনক।’

আইএইচএস/এমএস