দেশজুড়ে

দিশেহারা একটি পরিবার

কিডনি রোগে আক্রান্ত শয্যাশায়ী কবির হোসেনের চিকিৎসা করাতে পারছে না তার পরিবার। পরিবারের অক্ষমতায় বর্তমানে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন তিনি। চিকিৎসক তাকে কিডনির ডায়ালাইসিসসহ উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দিলেও টাকা জোগার করতে না পারায় প্রতিদিনের ওষুধও কিনতে পারছে পরিবারের সদস্যরা। বরং উপার্জন সক্ষম বাবা শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে থাকায় ইতোমধ্যে তিন সন্তানের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে গেছে।

Advertisement

স্বচ্ছল থেকে একেবারে নিঃস্ব হওয়া এই পরিবারটির বসবাস ঢাকার অদূরে সাভারের বাজার রোড এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে। শয্যাশায়ী কবির হোসেন কর্ম জীবনে ছিলেন দালান-কোঠার রংঙের কন্ট্রাক্টর। সব কিছু ভালোই চলছিল তাদের। হঠাৎ করে ২০১২ সালে পরিবারটিতে অন্ধকার নেমে আসে। স্ট্রোক করেন কবির হোসেনের। জমানো টাকায় বাইপাস সার্জারি করে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু ধীরে ধীরে তার পরিবারে কমতে থাকে প্রদীপের আলো। এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন ৫০ বছর বয়সী কবির হোসেন। সুস্থ হয়ে আবার শুরু করেন রংঙের কাজ। এর ছয় মাস পরেই তার দুটি কিডনিতে ধরা পড়ে জটিল রোগ।

রাজধানীর কিডনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তার দুটো কিডনিই বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। বেঁচে থাকার জন্য দ্রুত তারা কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টারে ভর্তির পরামর্শ দেন।

কবির হোসেনের বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক বাপ্পী বলেন, বেসরকারি হাসপাতালে তো দূরের কথা সরকারি কোনো হাসপাতালেও ডায়ালাইসিস করানোর মতো সক্ষমতা আমাদের নেই। বিষয়টি চিকিৎসককে জানালে তারা আপাতত কিছু ওষুধ খাওয়াতে বলে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন। গড়ে প্রতিদিন ৫০০ টাকার মতো ওষুধ দিয়েছেন ডাক্তার। কয়েক মাস খাওয়ানোর পর টাকার অভাবে বাবাকে আমরা ফুল কোর্স ওষুধ খাওয়াতে পারিনি।

Advertisement

বাপ্পী সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে মার্কেটিং বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। কিন্তু বাবার অসুস্থতার কারণে ছয় মাস যাবৎ নিজের পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছেন। অভিজ্ঞতা ও লবিংয়ের অভাবে কাজের সন্ধানে ছুটেও চাকরি হচ্ছে না কোথাও। এমনকি অসুস্থতার কারণে বাসা ভাড়া বকেয়া পড়ায় বাসা ছাড়ার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দিচ্ছে বাসার মালিক।

পরিবারটির এমন অসহায়ত্ব তুলে ধরে তরুণ অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট পারভেজ হাসান বলেন, আমি পরিবারটির অসহায়ত্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরার খুব চেষ্টা করছি, কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না। পরিবারটিকে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান মানুষগুলোর সহযোগিতা খুব প্রয়োজন।

এ বিষয়ে আরও খোঁজ নিতে যোগাযোগ করতে পারবেন কবির হোসেনের বড় ছেলে বাপ্পীর (০১৯৩৬-২৬৮২৭৬) সঙ্গে।

আল-মামুন/এমএএস/জেআইএম

Advertisement