জাতীয়

রোহিঙ্গায় দূষিত হচ্ছে কক্সবাজারের পরিবেশ

রোহিঙ্গাদের আগমনে কক্সবাজারের বাতাস, শব্দ, পানি ও জীব বৈচিত্র্য বিঘ্নিত ও দূষিত হচ্ছে বলে একটি যৌথ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) এবং ইউএন ওমেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা।

Advertisement

১০৩ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, প্রতিমাসে বাংলাদেশে আসা ৭ লাখ রোহিঙ্গা বন থেকে ৬৮০০ টন জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে ব্যবহার করছে, প্রতিটি পরিবারের ঘর তৈরিতে প্রয়োজন হচ্ছে প্রায় ৬০টি বাঁশ। কক্সবাজারের কুতুপালং ও বালুখালি ক্যাম্পে হাজারো টিউবওয়েল স্থাপনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির অভাব দেখা দিতে পারে।

এছাড়াও রোহিঙ্গারা টেকনাফ, উখিয়া, হিমছড়ির প্রায় ১২০০ থেকে ১৬০০ হেক্টর পাহাড়ি জমির গাছপালা সাফ করেছে, যা জীব বৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলমান অবস্থার কারণে কক্সবাজারে পানির অভাব, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণের মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই অবস্থা থাকবে।

Advertisement

উখিয়া এবং টেকনাফে ৪৩০০ একর পাহাড় ও বন কেটে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী ঘর তৈরি ও রান্নার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এর ফলে কক্সবাজারের প্রধান তিনটি ইকোলজিকাল এলাকা কক্সবাজার-টেকনাফ উপদ্বীপ, সোনাদিয়া দ্বীপ এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এছাড়াও রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ায় যানবাহন, শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ বেড়েছে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় রোহিঙ্গাদের ফেলে দেয়া ব্যবহৃত পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিকের বোতল কক্সবাজারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিপোর্ট প্রকাশের পর একটি ‘হাই লেভেল ডিসকাশন’ সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। যদিও তাদের কারণে কক্সবাজারের পরিবেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। সরকার ইতোমধ্যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে পরিস্থিতি উত্তরণে কাজ করছে। পাশাপাশি ইউএনডিপিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে সরকারকে সহযোগিতার আহ্বান জানাছি।

এ সময় ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ঠিক রাখতে সরকারের এখনই কাজ শুরু করতে হবে। আশা করছি আমাদের এই রিপোর্ট আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে কক্সবাজারের পরিবেশ ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও আর্থিক সাহায্য চাওয়া যাবে।

Advertisement

বর্তমান অবস্থা উত্তরণে প্রতিবেদনটিতে কয়েকটি সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়েছে।

এআর/এসএইচএস/এমএস