আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ছাড়া জাতীয় ঐক্য সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সবচাইতে প্রাচীন দল, সবচাইতে জনপ্রিয় দল আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হবে কেমন করে? সেটা হতে পারে তাদের নিজেদের তথা কথিত জাতীয়তাবাদী জাতীয় ঐক্য।
Advertisement
সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে জাতিসংঘের মহাসচিব বিএনপির মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে তারা প্রচার করেছেন। জাতিসংঘের সদর দফতর নিয়ে এ ধরনের ভাঁওতা ও প্রতারণা যারা জাতির সঙ্গে করে, তাদের নিয়ে কি বলবো? কি বলবো তাদের? কোনো আমন্ত্রণ তো নাই, যখন ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিউইয়র্কে গেলেন, তখন জাতিসংঘের মহাসচিব ঘানায় একটা প্রোগ্রামে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। যিনি দাওয়াত দিলেন তিনি ঘানা চলে গেলেন?
এ সময় যারা জাতিসংঘ নিয়ে এমন প্রতারণা করে তাদের হাতে দেশ নিরাপদ হতে পারে না বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা যেটা শুনেছি, জাতিসংঘের সদর দফতর গেট থেকে বারে বারে অনুরোধ করেছেন তারা। তাদের বক্তব্য ছিল যে পর্যায়েরই হোক দেখা করিয়ে দিতে, পরে একজন অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারিয়েট বিরক্ত হয়ে কিছুটা সময় দিয়েছে। আলোচনার পর জাতিসংঘ থেকে যে মন্তব্যটা এসেছে, তা হলে বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক এটা তারা চায়। এই কথা তো তারা বলেই আসছে, এই কথার জন্য তো ফখরুল ইসলামের নিউইয়র্কে যাওয়ার কথা ছিল না, জাতিসংঘের সদর দফতরে যাওয়ার কথা ছিল না। এটার জন্য লবিষ্ট নিয়োগ করে স্টেট ডিপার্টমেন্টেও যোগাযোগ করেছেন, কোথাও কোনো আমন্ত্রণ তাদের করেনি।
কাদের বলেন, আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, ফখরুল ইসলাম আলমগীর তথা বিএনপি দেশের জনগণের কাছে জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণ জানানোর প্রতারণা কেন করেছেন সেই জবাব তাদের আগে দিতে হবে। এই মিথ্যাচার হচ্ছে বিএনপির রাজনীতি। মিথ্যাচার প্রতারণায় তারা বিশ্বরেকর্ড ছাড়িয়েছে। এখন জাতিসংঘের মহাসচিবের নামেও তারা প্রতারণা ও মিথ্যাচার করে। এদের হাতে গণতন্ত্র কি কখনও নিরাপদ?
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে নামার জন্য বিএনপির হুমকিকে কীভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৩, ১৪, ১৫ সালের মত পেট্রল বোমার আন্দোলন কি বিএনপি শুরু করবে? সেই আন্দোলন যদি তারা করতে যায়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যা যা করণীয়, সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তফ্রন্ট গঠনকে আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব বিষয়ে অবগত। নির্বাচন আসছে এখন বিভিন্ন মেরুকরণ হবে, শত ফুল ফুটবে, আমরা মনে করি এটা গণতন্ত্রের বিউটি। এখন তারা ঠিক করবে তারা কাদের সঙ্গে জোট করবে, কার সঙ্গে করবেন না। কামাল সাহেব বলেছেন, জামায়াতের সঙ্গে তারা নেই। কাদের সিদ্দিকীও বলেছেন একই কথা। এখন নির্বাচনী মেরুকরণে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে গড়ায় এটা এই মুহূর্তে বলা খুব মুশকিল। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন জোট গঠনের যে প্রক্রিয়া এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। এর বিরুদ্ধে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।
Advertisement
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কিন্তু বিএনপির যে ঐক্য এটা সাম্প্রদায়িক ঐক্য। যাদের নিজেদের ঘরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নয় তারা দেশের মধ্যে কীভাবে ঐক্য গড়বেন? তারা নিজেরা একে অন্যকে সরকারের দালাল বলে, নিজেদের অফিসে মধ্যে নিজেরা অনেক সময়ই ঝগড়া বিবাদে লেগে থাকে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ প্রমুখ।
এইউএ/জেএইচ/আরআইপি