আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে কারাগারে ডিভিশনের জন্য হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।
Advertisement
একই সঙ্গে শুনানি শেষে আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছে।
আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর চেম্বার জজ আদালত আবেদনটি বাদ দেন। ফলে হাইকোর্টের দেয়া শহিদুলের ডিভিশন বহাল থাকলো। শহিদুলের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাষ্ট্রপ্রক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনালের মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। অপরদিকে, শহিদুলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
Advertisement
আইনজীবী সারা হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন। এতে কারাগারে শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির বন্দির সুবিধা দিতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রইলো।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিল করতে বলেছেন চেম্বার বিচারপতি।
গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এক আদেশে শহিদুল আলমকে প্রথম শ্রেণির বন্দির সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। শহিদুল আলমকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিন আদালত রুলসহ আদেশ দেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ‘উসকানিমূলক মিথ্যা’ প্রচারের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় গত ৫ আগস্ট রাতে শহিদুল আলমকে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে নেয় ডিবি। সাতদিনের রিমান্ড শেষে গত ১২ আগস্ট শহিদুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন নিম্ন আদালত।
Advertisement
ওই মামলায় গত ৬ আগস্ট ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। ১৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করা হলে ১১ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন। এরপর ১৯ আগস্ট শুনানির তারিখ এগোনোর জন্য আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করা হয়নি।
২৬ আগস্ট শহিদুল আলমের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন চাইলে ওই আদালত শুনানির জন্য তা গ্রহণ করেননি। এ অবস্থায় ২৮ আগস্ট হাইকোর্টে তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়। ২৯ আগস্ট আবেদনটি শুনানির জন্য আরজি জানানো হয়।
৪ সেপ্টেম্বর আবেদনটির ওপর শুনানিতে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের একজন বিচারপতি বিব্রতবোধ করেন জানিয়ে আদালত বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠালে ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট শহিদুল আলমের আবেদন পরদিন ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিম্ন আদালতে নিষ্পত্তির আদেশ দেন। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস শহিদুল আলমের জামিন আবেদন নাকচ করেন।
শহিদুলের বিরুদ্ধে ‘কল্পনাপ্রসূত তথ্য’র মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে ‘মিথ্যা প্রচার’ চালানো, উস্কানিমূলক তথ্য উপস্থাপন, সরকারকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও অকার্যকর’ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অবনতি ঘটিয়ে’ জনমনে ‘ভীতি ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে’ দেয়ার ষড়যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নে ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ‘অপপ্রচারের’ অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
এফএইচ/এআর/এনডিএস/এমএআর/জেআইএম/এমএস