অর্থনীতি

আলোর মুখ দেখছে ঢাকা-দার্জিলিং রেল প্রকল্প

এক সময় বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ট্রেনে চেপে যাওয়া যেত ভারতের দার্জিলিং। তবে ৫২ বছর আগে সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে আবার সেই রেলপথ চালু করতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ নিয়ে একটি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে বলে আগেই শোনা গিয়েছিল। এবার সে প্রকল্প আলোর মুখ দেখছে।

Advertisement

আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপনের কথা রয়েছে। একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সভায় সভাপতিত্ব করবেন।

পরিকল্পনা কমশিন সূত্র জানায়, ভারতের দার্জিলিংয়ের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের চিলাহাটি এবং হলদিবাড়ি সীমান্তের মধ্যে রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যেই রেলপথটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। অপরদিকে ভারত অংশের কাজ শিগগিরিই শেষ হবে। এছাড়া বাংলাদেশ-ভারত সব পুরাতন রেল লিংক পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশ।

জানা গেছে, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট চালুর লক্ষ্যে চিলাহাটি অংশে ৭ কিলোমিটার এবং ভারতের হলদিবাড়ি অংশে ৩ কিলোমিটার রেলপথ পুনরায় নির্মাণ করা হবে। মোট ১০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করলেই দু’দেশের মধ্যে এই করিডোরে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হবে।

Advertisement

চিলাহাটি থেকে চিলাহাটি বর্ডার পর্যন্ত ব্রডগেজ কানেক্টিভিটি স্থাপনের মাধ্যমে উপ-আঞ্চলিক রেল সংযোগ স্থাপিত হবে। এতে করে মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃদ্ধিসহ নেপাল ও ভুটানের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে বলে জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে এই করিডোর দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন পরিচালনার দুয়ার উন্মোচিত হবে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের রেল পরিবহন উইংয়ের উপ-প্রধান পরিমল চন্দ্র বসু বলেন, বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট বহু পুরাতন। এই প্রকল্প অনুমোনদ হলে নতুন করে ঢাকা থেকে সরাসরি শিলিগুড়ি-দার্জিলিং পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপিত হবে। এতে দুই দেশ আর্থিকভাবেও উপকৃত হব। কেননা মানুষের চলাচলের পাশাপাশি স্টেশন দুটি চালু হলে মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃদ্ধি পাবে। এর পাশাপাশি নেপাল-ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, চিলাহাটি-হলদিবাড়ি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট চালুর লক্ষ্যে চিলাহাটি অংশে সাত কিলোমিটার এবং ভারতের হলদিবাড়ি অংশে তিন কিলোমিটার রেলপথ পুনরায় নির্মাণ করা হবে। মোট ১০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করলেই দু’দেশের মধ্যে এই করিডোরে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হবে। এই লক্ষ্যে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের স্টেশন দুটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক। ভারত বিভাজনের আগে এ করিডোর দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিং পর্যন্ত সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু ছিল। তখন এই করিডোর দুই বাংলার অর্থনৈতিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল। তবে ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর এই রুটে সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। কালের পরিক্রমায় করিডোরটিও গুরুত্ব হারায়।

Advertisement

রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার বাংলাদেশ-ভারত দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বন্ধ হওয়া সেকশন পর্যায়ক্রমে পুনঃচালুর মাধ্যমে অবিচ্ছিন্ন রেল নেটওয়ার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছ।

এমএ/এমবিআর/জেআইএম