পোশাক শ্রমিকদের ৮ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি নিয়ে অসন্তোষের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
Advertisement
রোববার সচিবালয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে বিএসআরএমের লভ্যাংশ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
গত বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা করার ঘোষণা দেয়া হয়। বর্তমানে এই মজুরি ৫ হাজার ৩০০ টাকা। নতুন মজুরি আগামী ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি কোনো কোনো শ্রমিক সংগঠন মানছে চাইছে না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কে মানবেন, কে মানবেন না সেটা তাদের বিষয়। তবে এটা মিনিমাম, এর নিচে বেতন দেয়া যাবে না।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পোশাক মালিকরা অবকাঠামো উন্নয়ন করেছেন। এতে তাদের শত শত কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কারখানা কমপ্ল্যায়েন্স করার পরও ক্রেতারা দাম কমিয়েছেন। তারা একদিকে কমপ্ল্যায়েন্স করার জন্য চাপ দেয়, অপরদিকে দাম কমিয়ে দেয়। তারা আসলে দ্বিমুখী আচরণ করে, এটা ঠিক না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেতন বাড়িয়ে দিলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে শ্রমিকরা চাকরি হারাবেন। যেসব সংগঠন এগুলো (ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখ্যান) বলছে, তারা আসলে কতটুকু শ্রমিক দরদী আর কতটুকু অন্য উদ্দেশ্য তাদের, সেটা আমার কাছে প্রশ্ন?
তিনি বলেন, দুই পক্ষের স্বার্থ রক্ষার জন্য ন্যূনতম মজুরি যৌক্তিক মনে করে আমরা তা ঘোষণা করেছি।
ন্যূনতম মজুরিকে কেন্দ্র করে এই খাতকে অস্থিতিশীল করার কোনো আশঙ্কা আছে কি-না জানতে চাইলে মুজিবুল হক বলেন, গার্মেন্ট খাতের প্রায় সব সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার আগে আমি আন অফিসিয়ালি শ্রমিক, শ্রমিক ফেডারেশন, ইউনিয়ন অনেকের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তারাও বলেছেন যদি ৮ হাজার টাকা হয় তাহলে হয়তো সবাই সেটা গ্রহণ করবে।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা ধারণা বেশিরভাগ গার্মেন্ট শ্রমিক এটা মেনে নেবেন। কোনো অস্থিরতা সৃষ্টির সুযোগ নেই। কারণ মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
‘আমরা মনে হয় না শ্রমিক অসন্তোষ...কিছু কিছু শ্রমিক সংগঠন আছে তাদের উদ্দেশ্য ভাল নয়। দুই-তিন বছর আগে হঠাৎ করে দেখলাম তারা কিছু শিশুদের প্রেস ক্লাবে দাড় করিয়ে বলছেন তারা রানা প্লাজায় মৃত ব্যক্তিদের সন্তান। আমি খবর নিলাম যে তাদের এতিমখানা থেকে আনা হয়েছে। এরাই আইএলওর কাছে দরখাস্ত করেছিল। পরে আমি আইএলও’র ডিজিসহ যারা আছেন তাদের দেখালাম, এই দেখেন প্রমাণ, এতিমখানা থেকে আনা হয়েছে’ বলেন জাতীয় পার্টির নেতা মুজিবুল হক।
তিনি বলেন, ‘এমন উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করা কিছু কিছু সংগঠন আছে। আমরা খুবই কেয়ারফুল, উদ্দেশ্যমূলকভাবে যদি কিছু করতে চায় তবে তারা কিছু করতে পারবে না। কারণ সাধারণ শ্রমিকদের সমর্থন আমাদের সঙ্গে আছে। তাই কোনো সমস্যা হবে বলে আমি মনে করি না। অসন্তোষ না হওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রীর কমিটমেন্ট অনুযায়ী মজুরি ঘোষণা করেছি।’
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাই অসন্তোষ হওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না। ভাল কাজ করলে কেউ না কেউ বিরোধী তো থাকেনই। এক লাখ টাকা বেতন দিলেও কেউ কেউ বলবেন এতে হয় না আরও লাগবে।’
আরএমএম/এমএমজেড/এমএস