রাজনীতি

বিএনপি জাতিসংঘের দাওয়াত পাওয়ায় ক্ষমতাসীনরা শঙ্কিত : মওদুদ

জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য বিএনপিকে নিউইয়র্কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এ জন্য ক্ষমতাসীনরা শঙ্কিত, বিব্রত এবং ঈর্ষান্বিত হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।‘গণগ্রেফতার ও বিচার বিভাগের উপর সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং নির্দলীয় সরকারের দাবি’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম নামে একটি সংগঠন।

বিএনপি মহাসচিবের যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘বিএনপি একটি নালিশ দলে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের কাছে নালিশ করতেই দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।’

ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে মওদুদ বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন সময়ের অভাবে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেননি। সেজন্য তিনি বিএনপিকে আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতেই আমাদের মহাসচিব নিউইয়র্ক গেছেন, নিজের থেকে যাননি। তিনি নালিশ করতে নয়, দেশের বাস্তব অবস্থা তুলে ধরার জন্য গেছেন। দেশে এখন কী অবস্থা বিরাজ করছে এবং বিরোধী দলের ওপর যে অত্যাচার নিপীড়ন নির্যাতন হচ্ছে, সাধারণ মানুষের ওপর যে অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন যেটা হচ্ছে, সেগুলোই তুলে ধরার জন্য গেছেন।’

Advertisement

তিনি বলেন, এতে ক্ষমতাসীনরা শঙ্কিত হয়েছেন, অত্যন্ত বিব্রত বোধ করছেন। ভাবছেন কী করে জাতিসংঘ মহাসচিব বিএনপি নেতাদের আলোচনার জন্য নিউইয়র্কে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এতে তারা ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব কথা বার্তা বলছেন।

মওদুদ বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য হবে, সব রাজনৈতিক দল যারা গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা,মানুষের মৌলিক অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে চান, সবাই আজ একটা পয়েন্টে একমত। সেটা হলো আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ হতে হবে। এই ঐক্য অনেকটাই হয়ে গেছে। এটাকে আরও সংঘবদ্ধ করতে হবে। আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাইলে ভোটের ৯০দিন আগে সংসদ বাতিল ও প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি পদত্যাগ না করলে নির্দলীয় সরকার গঠন সম্ভব হবে না। আমরা তো সর্বদলীয় সরকার চাই না, নির্দলীয় সরকার চাই।’

মওদুদ বলেন, ‘সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচনের আর তিন মাস সময় আছে। কিন্তু এর জন্য যে পরিবেশের প্রয়োজন তার ন্যূন্তম অবস্থা এখন বিরাজ করছে না। সরকারি দল যেখানে ইচ্ছে সভা করতে পারে। রেল ষ্টেশনে পর্যন্ত সভা করতে পারে। আর বাংলাদেশ জাতীয়তাবদাী দলের চেয়ারপারসন জেলখানায়, মামলার পর মামলা চলছে।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘আজকে বলা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সরকার। নির্বাচনকালীন সরকার বলে আমাদের সংবিধানে কিছু নাই, এটা প্রতারণা। জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলা। সবাইকে বলবো, দয়া করে সংবিধানটা পড়েন, দেখুন কোথাও লেখা আছে কিনা যে দেশে নির্বাচনকালী একটা সরকার হবে।

মওদুদ বলেন, এখন আদালতকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী, আমি তার নাম বলতে চাই না বলেছেন, বিএনপির আইনজীবীরা আইন জানেন না। দুঃখের সঙ্গে শুধু এইটুকু বলতে চাই তিনি যেটা বলেছেন সেটা সঠিক নয়।

আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সাইদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে এবং সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর অংশ) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ ।

কেএইচ/এমএমজেড/পিআর