দিন তিনেক আগে কেনিংটন ওভাল টেস্ট শেষেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন ইংলিশ ক্রিকেটার অ্যালিস্টার কুক। তার অবসরের খবরে বিশ্ব ক্রিকেট থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ক্রিকেটেও নেমে আসে এক নিস্তব্ধতা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা হয় কুক-বন্দনা, জানানো হয় তার প্রতি কুর্নিশ।
Advertisement
অনেকের লেখনীতেই দেখা যায়, 'কুকের বিদায়েই এতো খারাপ লাগছে, আমাদের সাকিব-মাশরাফিদের বেলায় সহ্য করা যাবে তো?' আসলেই তো! প্রায় এক-দেড় দশক ধরে খেলতে মাশরাফি, সাকিব, তামিমরা অবসরের সিদ্ধান্ত নিলে তখন কি অবস্থা হবে বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের? মেনে নিতে পারবেন তো তারা? শোকে ম্রিয়মাণ হওয়ার সম্ভাবনাও অনেক।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আসন্ন এশিয়া কাপের মধ্য দিয়েই বাজতে শুরু করবে মাশরাফির শেষের ঘণ্টা। শনিবার থেকে এশিয়া কাপের আসরটিই হতে পারে বাংলাদেশ অধিনায়কের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বশেষ বড় টুর্নামেন্ট।
২০১৭ সালের এপ্রিলে হুট করেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন মাশরাফি আর ইনজুরির কারণে ২০০৯ সালের পর থেকে খেলেননি টেস্ট ক্রিকেটও। বছর দেড়েক ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে মাশরাফি শুধু ওয়ানডে ক্রিকেটটাই খেলছেন। প্রায়ই শোনা যায় ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটটাও ছেড়ে দেবেন মাশরাফি।
Advertisement
আর যদি এমনটাই হয় তাহলে আসন্ন এশিয়া কাপটিই মাশরাফির ক্যারিয়ারের শেষ এশিয়া কাপ টুর্নামেন্ট। যদি ইংল্যান্ডে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পরে অবসর নাও নেন মাশরাফি, তবু তার আর কোনো এশিয়া কাপ খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কেননা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী ২০২০ সালের এশিয়া কাপের পরবর্তী আসরটি হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। ক্রিকেটের এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেয়ায় সেটি খেলা হবে না দেশসেরা অধিনায়কের। ওয়ানডে ফরম্যাটের পরবর্তী আসরটি হবে ২০২২ সালে। ততদিনে মাশরাফির বয়সের কাঁটা ছুঁয়ে ফেলবে ৩৯ এর ঘর। এতদিন পর্যন্ত মাশরাফি খেলাটা চালিয়ে নেবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
আর যদি ২০১৯ সালের বিশ্বকাপটিই হয় মাশরাফির ক্যারিয়ারের শেষ অ্যাসাইনমেন্ট, তাহলে বিশ্বকাপের আগে এই এশিয়া কাপই বলা যায় তার ক্যারিয়ারের বড় কোন টুর্নামেন্ট। ক্যারিয়ারে এখনো পর্যন্ত কোন বৈশ্বিক শিরোপা জেতা হয়নি মাশরাফির। দেশের ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক তকমাটা তার নামের পাশে থাকলেও বড় কোন শিরোপা নেই মাশরাফি তথা বাংলাদেশের ট্রফি কেবিনেটে।
এশিয়া কাপ খেলতে দুবাই যাওয়ার আগে নিজেদের সম্ভাব্য ফেবারিট মেনেই গিয়েছে বাংলাদেশ দল। নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারলে মাশরাফির শেষের শুরুতেই বাংলাদেশের ট্রফি কেবিনেটে উঠবে প্রথম কোন বড় শিরোপা।
Advertisement
এর আগে ২০১৬ সালের আসরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। সেবার ফাইনালে ভারতের কাছে হারতে হয়েছিল টাইগারদের। এবার প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে অধিনায়কত্ব করবেন আগামী মাসে ৩৫তম জন্মদিনের অপেক্ষায় থাকা।
ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপে অধিনায়কত্বের অভিষেকটাই হতে যাচ্ছে মাশরাফির ক্যারিয়ারের শেষ এশিয়া কাপ। এই টুর্নামেন্টে নিজেদের সাধ্যমতো খেলতে পারলেই উৎসবের রঙে রাঙিয়ে থাকবে মাশরাফির শেষের শুরু...
এসএএস/এমএস