‘এই যে সামনে যে মসজিদটি দেখতে পাচ্ছেন সেটি ইসলামের প্রথম মসজিদ। হিজরতের পর মুহাম্মদ (সা.) এই মসজিদের ভিত্তিস্থাপন করেন। এখানে তিনি বেশ কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন। এ মসজিদে দুই রাকাত নামাজ পড়লে একবার ওমরাহ হজ পালনের সমান সওয়াব পাওয়া যায়।’
Advertisement
বুধবার সকালে একদল হাজিকে নিয়ে বাসযোগে কুবা মসজিদে যাওয়ার পথে হজ সুপারভাইজার এমন কথা বললে বাসে বসা হাজিরা নড়েচড়ে বসেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিভিন্ন দেশের হাজিরা কেউ বাস রিজার্ভ কেউ প্রাইভেটকারে কিংবা পায়ে হেঁটে মসজিদে আসছেন। ওজু করে দ্রুত দু’রাকাত নামাজ পড়ে নিচ্ছেন। অনেকেই হতবাক হয়ে শতশত বছরের পুরনো মসজিদটির চারদিক ভালো করে দেখে নিচ্ছেন।
মসজিদে কুবা বা কুবা মসজিদটি সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত। এটি ইসলামের প্রথম মসজিদ। মসজিদে কুবা মদিনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। মসজিদে নববী থেকে এর দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।
Advertisement
জানা যায়, কুবা একটি বিখ্যাত কূপের নাম। সময়ের পরিক্রমায় এ কূপকে কেন্দ্র করে যে জনবসতি গড়ে উঠেছে, তাকেও কুবা বলা হতো। এরই সূত্রে মসজিদের নাম হয়ে যায় মসজিদে কুবা।
দুনিয়ার বুকে প্রতিষ্ঠিত সব মসজিদের ফজিলত সমান হলেও চারটি মসজিদের ফজিলত অন্য সব মসজিদ থেকে ভিন্ন। তন্মধ্যে বায়তুল্লাহর মর্যাদা সবার ওপরে। এরপর ধারাবাহিকভাবে মসজিদে নববী, বায়তুল মুকাদ্দাস ও মসজিদে কুবা। প্রথমোক্ত তিন মসজিদের ফজিলত সর্বজনবিদিত হলেও চতুর্থটির ব্যাপারে খুব একটা আলোচনা হয় না।
হজ গাইডরা জানান, মসজিদে কুবায় নামাজের ফজিলতের কথা অসংখ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন- হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অশ্বারোহণ করে কিংবা হেঁটে মসজিদে কুবায় আগমন করতেন এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন।
অন্য এক হাদিসে রয়েছে, প্রতি শনিবারে রাসুল (সা.) কুবায় আগমন করতেন। (বুখারি-মুসলিম)। আরেক হাদিসে বর্ণিত আছে, মসজিদে কুবায় নামাজ আদায় করার সওয়াব একটি ওমরাহর সমপরিমাণ। (তিরমিজি)
Advertisement
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি নিজের ঘরে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করে (সুন্নাত মোতাবেক অজু করে) মসজিদে কুবায় আগমন করে নামাজ আদায় করে তাকে একটি ওমরাহর সমপরিমাণ সওয়াব দান করা হবে। (ইবনে মাজাহ)।
তাই তো রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগ থেকেই প্রতি শনিবার মসজিদে কুবায় নামাজ আদায় মদিনাবাসীর অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। বর্তমানেও তাদের এই আমল অব্যাহত রয়েছে।
এমইউ/বিএ