জাতীয়

স্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে না বাংলাদেশ

স্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে না বাংলাদেশ। বুধবার হ্যানয়ে আসিয়ানের ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। তাই তাদের সেখানেই ফিরে যেতে হবে বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র সচিব।

Advertisement

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৩০টি পুলিশ চেকপোস্ট এবং সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি। এর পরেই রাখাইনের গ্রামগুলোতে অভিযানের নামে অত্যাচার-নির্যাতন চালায় মিয়ানমার সেনারা।

রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ এবং রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এতে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম নিজেদের বাড়ি-ঘর থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

গত বছরের নভেম্বরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। ওই চুক্তির আওতায় দু'মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কার্যকরী কোন পদক্ষেপই এখনও শুরু হয়নি। বরং এখনও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা।

Advertisement

পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক রয়টার্সকে বলেন, তাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার কথা ভাবছি না আমরা। তারা মিয়ানমারের নাগরিক। তাই তাদের সে দেশেই ফিরে যেতে হবে।

মানবিকতার ওপর ভিত্তি করে উন্নত দেশগুলোকে আরও রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্যও আহ্বান জানান তিনি। শহিদুল হক বলেন, মিয়ানমার বা অন্য কোন দেশে স্থায়ীভাবে আশ্রয় না পাওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকতে পারবে।

গত মাসে এক তদন্ত রিপোর্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়ে, রাখাইনে গণহত্যা চালিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেখানে ধর্ষণ ও গণহত্যার যথেষ্ঠ প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় সেনাবাহিনীর প্রধান এবং পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

তবে বরাবরই নিজেদের বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। দেশটির তরফ থেকে বলা হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ট্রানজিট সেন্টার তৈরি করছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, রোহিঙ্গাদের জন্য তা যথেষ্ঠ নিরাপদ নয়। বর্তমানে বাংলাদেশের কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন রোহিঙ্গারা।

Advertisement

টিটিএন/আরআইপি