গত ২৪ ঘন্টা রাজধানী ঢাকাসহ বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি হয়েছে বেশ। তারপরও সারা দেশে প্রচন্ড গরম। কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পর যে শহরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপে টাইগারদের প্রথম ম্যাচ, সেই দুবাই আরও বেশি গরম। তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঝাঁঝালো রোদ। উষ্ণতাও খুব বেশি।
Advertisement
ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের দিন মানে ১৫ সেপ্টেম্বরও এমন আবহাওয়াই থাকবে। যদিও খেলা দিবা-রাত্রিতে। তারপরও বিকেলে কড়া রোদ থাকে। আর্দ্রতাও থাকবে বেশি। কাজেই ধরেই নেয়া যায়, দুবাইয়ের অসহনীয় উত্তাপ ও আর্দ্রতার কারণে ক্রিকেটারদের বাড়তি ঘাম নির্গত হবে। শারীরিক শক্তিও ক্ষয় হবে বেশি। এটা তো শারীরিক।
জানা গেছে, একটা ক্রিকেটীয় প্রতিকূলতার সম্ভাবনাও নাকি আছে। দিনে প্রচন্ড গরম পড়লেও সন্ধ্যার পরে নাকি দুবাইয়ের আবহাওয়া খানিক বদলে যায়। দুবাই স্টেডিয়ামের কিউরেটর টবি লামসডেনের কথাও তাই।
এ ইংলিশ কিউরেটরের ধারণা, এবারের এশিয়া কাপে আবহাওয়া একটা বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তার কথা, 'আমার মনে হয় এশিয়া কাপের খেলাগুলোর ওপর আবহাওয়ার একটা প্রভাব থাকবে। এখন দুবাইতে দিনে কড়া রোদ। সন্ধ্যার পরে রোদ না থাকলে উষ্ণ-আর্দ্র আবহাওয়া। পাশাপাশি আবার শিশিরও পড়ে। যাতে করে উইকেটের চরিত্র ও আচরণে ভিন্নতা আসতে পারে। মানে একেক সেশনে উইকেট একেক রকম আচরণ করতে পারে। বিকেলে কড়া রোদের মধ্যে পেসাররা বাড়তি সুবিধা পাবেন। আর সন্ধ্যার পর শিশির পড়লে খুব স্বাভাবিকভাবে সীম ম্যুভমেন্ট হবে। আবার স্পিনারদের বল গ্রিপ করতেও কষ্ট হতে পারে।’
Advertisement
সন্ধ্যা নামার ঘন্টা দুয়েক পর নাকি বেশ শিশির পড়ে। শিশিরে ভিজে একাকার হয় মাঠ ও চারপাশ। আউটফিল্ড শিশিরে ভেজার অর্থ বল ভিজে যাওয়া। স্পিনারদের বল গ্রিপিংয়ে সমস্যা এবং পেসারদের বল স্কিড করা। তার মানে বাংলাদেশের একাদশ সাজাতে, লক্ষ্য, পরিকল্পনা আর কৌশল নির্ধারণে দুবাইয়ের আবহাওয়ার বদলে যাওয়া রূপের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সত্যিই যদি শিশির পড়ে তাহলে প্রথাগত পথে হাঁটার সুযোগ থাকবে কম। দল সাজানো, বিশেষ করে একাদশ সাজাতে ভাবতে হবে। শিশিরের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। শিশির ভেজা পিচে পরের সেশনে ফিল্ডিং করার মানেই হলো বোলারদের বিশেষ করে স্পিনারদের স্বাভাবিক বোলিংয়ের পথে বাধা-বিপত্তি। এবং স্পিনার খেলানোয় বাড়তি ঝুঁকি। তাছাড়া বল স্কিড করার সম্ভাবনা যেহেতু বেশি, তাই বাড়তি পেসার নিয়ে নামাই অধিক যুক্তিযুক্ত।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ একাদশে বাড়তি স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা যাবে কমে। সাকিব আল হাসানের সাথে বড়জোর একজন স্পিনার দেখা যেতে পারে। মানে বাড়তি স্পিনার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ আর বাঁহাতি নাজমুল হোসেন অপু, দুজনার খেলার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে। শিশির পড়লে তিন স্পিনার নিয়ে খেলার সম্ভাবনা আসলে শুন্যের কোঠায় নেমে যাবে। বরং তার বদলে একজন বাড়তি পেসার দেখা যেতে পারে।
তবে বাংলাদেশ দলের যা গঠন শৈলি, আর যেহেতু সে অর্থে কোনো ভাল মানের সিমিং অলরাউন্ডার নেই, তাই তিন জনের বেশি পেসার খেলানোর সুযোগও কম। তাহলে দলের শক্তির ভারসাম্য যাবে কমে। মোদ্দা কথা, যতই শিশির পড়ে আউটফিল্ড আর বল ভিজে পেসারদের অনুকূল হয়ে যাক না কেন, চার পেসার নিয়ে মাঠে নামার মত অবস্থা কিন্তু নেই বাংলাদেশের।
Advertisement
তাতে একজন ব্যাটসম্যান কম নিয়ে খেলতে হবে। ব্যাটিং শক্তি যাবে কমে। কিন্তু বাংলাদেশের এখনকার যে শক্তি ও সামর্থ্য, তাতে অলরাউন্ডার সাকিবসহ সাতজনের কম ব্যাটসম্যান খেলানোর অবকাশ খুব কম। সেক্ষেত্রে তিন পেসারই হতে পারে সর্বোচ্চ। স্পেশালিষ্ট স্পিনার কোটায় সাকিব আল হাসানের সাথে অফস্পিনার মিরাজ, বাঁহাতি নাজমুল অপুর একজন আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে দিয়ে কাজ চালানোর সম্ভাবনা বেশি।
আবার উল্টোটাও হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, মোহাম্মদ মিঠুনকে মিডল অর্ডার পজিশনে নিয়মিত খেলানো হবে। তার মানে তামিম-লিটন, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর পর ছয় নম্বরে খেলবেন মিঠুন। শিশির পড়লে সাত নম্বরে মোসাদ্দেকের বদলে আরিফুলও ঢুকে যেতে পারেন। কারণ একদম নিয়মিত না হলেও আরিফুলও ঘরের ক্রিকেটে সীম বোলার হিসেবে পরিচিত। তার সাথে হয়তো অার একজন স্পিনার (মিরাজ-অপুর একজন) আর মাশরাফি, মোস্তাফিজের সাথে ও রুবেল-আবু হায়দার রনির যে কোনো তিন পেসার খেলবেন।
এআরবি/এমএমআর/আরআইপি