জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৬ সালের জন্য ৫৬ উদ্যোক্তাকে ‘বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তি হিসেবে (সিআইপি শিল্প) নির্বাচিত করেছে সরকার।
Advertisement
আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত সিআইপিদের হাতে এ কার্ড তুলে দেবেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। যা দিয়ে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন তারা। ভারপ্রাপ্ত শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী এবং এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
বাংলাদেশের বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য, উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতে অবদানের জন্য ‘সিআইপি (শিল্প) নির্বাচন নীতিমালা-২০১৪ অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জন্য পাঁচ ক্যাটাগরিতে এই ৫৬ ব্যবসায়ীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। চলতি বছরের ৮ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করে শিল্প মন্ত্রণালয়।
সিআইপি (শিল্প) নির্বাচিতরা হলেন : ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি এ কে আজাদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান পদাধিকারবলে সিআইপি হন।
Advertisement
একই ক্যাটাগরিতে সিআইপি হয়েছেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) প্রেসিডেন্ট রূপালী হক চৌধুরী, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সেলিমা আহমাদ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তপন চৌধুরী এবং জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বাংলাদেশের (নাসিব) সভাপতি মির্জা নুরুল গণি শোভন।
বৃহৎ শিল্প (উৎপাদন) খাতে সিআইপি হয়েছেন ২০ জন। তারা হলেন- বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী, ইউনিভার্সেল জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন, বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. পারভেজ রহমান, এসিআই লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আরিফ দৌলা, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমের আলী হোসাইন, জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস ছামাদ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (নোমান), কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের পরিচালক তানভীর আহমেদ, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মোনেম, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবু নোমান হাওলাদার, পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা সালমান ইস্পাহানি, ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মামুন ভূঁইয়া, এম আর এস ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামসুর রহমান, মেসার্স ভিয়েলাটেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে. এম. রেজাউল হাসানাত, সোহাগপুর টেক্সটাইল মিলসের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের মনোনীত মালিক পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, এনভয় টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন আহমেদ, বাদশা টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বাদশা মিয়া, মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক সায়েম সোবহান।
বৃহৎ শিল্প (সেবা) খাতের সিআইপি পাঁচজন। তারা হলেন- এসটিএস হোল্ডিংস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার মনির উদ্দীন, নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম কামাল উদ্দিন, জিএমই এগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী হাসান মাহমুদ, শেলটেকের (প্রা.) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. তৌফিক এম সেরাজ।
মাঝারি শিল্প (উৎপাদন) খাতের নির্বাচিত সিআইপি ১২ জন। তারা হলেন- দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী। তিনি আরএফএল প্লাস্টিকস লিমিটেডের পরিচালক হিসেবে সিআইপি হয়েছেন। এ ছাড়া প্রমি এগ্রো ফুডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এনামুল হাসান খান, অকো-টেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সোবহান, মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া লিটন, ফু-ওয়াং ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরী, অ্যাকোয়া মিনারেল টারপেনটাইন অ্যান্ড সলভেন্টস প্ল্যান্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রামজুল সিরাজ, মেসার্স সিটাডেল এপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলাম খান, জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জব্বার মোল্লা, বসুমতি ডিসট্রিবিউশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেড এম গোলাম নবী, মোনেম ইগলু ফুডস লিমিটেডের পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দিন, বি আর বি পলিমার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান, মোশাররফ স্পিনিং মিলস (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন।
Advertisement
মাঝারি শিল্প (সেবা) খাতের তিনজন নির্বাচিত সিআইপি হলেন, স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান খান মো. আফতাব উদ্দিন, শান্ত প্রোপার্টিসের পরিচালক মিজ জেসমিন সুলতানা এবং বিল্ডিং ফর ফিউচারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভিরুল হক প্রবাল।
ক্ষুদ্র শিল্প (উৎপাদন) খাতের সিআইপি হন পাঁচজন। তারা হলেন- কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজবার রহমান, ফুজি ইংক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মিজ ফারহানা মোনেম, আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, রানার ব্রিকস লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন এবং সবজীয়ানা লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবু শাহরিয়ার।
ক্ষুদ্র শিল্প (সেবা) খাতের একজন সিআইপি হলেন- কিউএনএস কনটেইনার সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুরুল কাইয়ুম খান। মাইক্রো শিল্প খাতের একজন হলেন টেকনোমিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যশোদা জীবন দেব নাথ। কুটির শিল্প খাতের সিআইপি হলেন এবি ফ্যাশন মেকারের স্বত্বাধিকারী সানাউল হক বাবুল।
উল্লেখ্য, কার্ড পাওয়ার পর থেকে এক বছরের জন্য সিআইপিরা ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের সময় বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন। সহজে ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের অনুকূলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে ‘লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন’ দেবে। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা এবং সচিবালয়ে প্রবেশের পাস পাবেন তারা। এ ছাড়া শিল্পবিষয়ক নীতিনির্ধারণী কোনো কমিটিতে সিআইপিদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে সরকার। এ ছাড়া বিদেশে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বৈঠকের সুযোগ পাবেন সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে।
এসআই/জেএইচ/জেআইএম