বিতর্ক থেকে মুক্তিই মিলছে না জাতীয় দলের ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন রাজীবের। জাতীয় দলেও সুযোগ পাচ্ছেন না দীর্ঘদিন। এরই মধ্যে গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় দুইমাস কারাবাসে থাকতে হয়েছে তাকে। যে ঘটনা তার পুরো ক্যারিয়ারের জন্যই একটা বড় ধরনের হুমকি। এরই মধ্যে, হঠাৎ রোববার সন্ধ্যা থেকেই কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ায় খবর, শাহাদাত রাজীব নাকি একজন সিএনজি ড্রাইভারকে পিটিয়েছেন, চড়-থাপ্পড় মেরেছেন।
Advertisement
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার বিকেলে আসাদগেট এলাকায়। ভিড়ের মধ্যে একটি সিএনজি রাজীবের গাড়িকে ধাক্কা মারে। শাহাদাত রাজীব নাকি গাড়ি থেকে নেমে এসে সিএনজি ড্রাইভার লিটনকে তার গাড়ি থেকে নামিয়ে চড়-থাপ্পড় মেরেছিলেন।
তবে মূল ঘটনা তেমনটি নয়। ক্রিকেটার শাহাদাত রাজীব জাগো নিউজকে নিজেই জানিয়েছেন, ‘সিএনজি ড্রাইভারের ওপর চড়-থাপ্পড় দেয়ার যে সংবাদগুলো পরিবেশন করা হয়েছে, এগুলো মোটেও সত্য নয়। আমার সঙ্গে তার সর্বোচ্চ তর্কাতর্কি হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।’
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাজীব জাগো নিউজকে বলেন, ‘রোববার বিকেলে আসাদগেটের কাছে ভিড়ের মধ্যে দুই সিএনজি একটি অপরটিকে চাপ দেয়ার কারণে, লিটন ভাইয়ের সিএনজি আমার গাড়িকে ধাক্কা দেয়। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ হিসেবে আমার রাগ হয়েছিল। গাড়ি থেকে নেমে সিএনজি ড্রাইভার লিটন ভাইয়ের কাছে আমি ক্ষতিপূরণ দাবি করি। না হয়, স্যরি বলতে বলি। এ নিয়েই মূলতঃ তর্কাতর্কি হয়। ওই সময় তৃতীয় এক ব্যক্তি এসে আমার ছবি তোলে। কিন্তু সেটা মোটেও মারামারি করার কোনো ছবি নয়। হয়তো হাত উঁচিয়ে কথা বলার কোনো দৃশ্য ছিল। আর এটাকেই কয়েকটি মিডিয়া বানিয়ে দিয়েছে, আমি নাকি সিএনজি ড্রাইভারের গায়ে হাত তুলেছি। এটা খুবই জঘন্য একটি কথা। পুরোপুরি মিথ্যা। ঘটনাটাকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে পরিবেশন করা হয়েছে।’
Advertisement
শাহাদাত রাজীব জানান, তিনি পরে বুঝতে পেরেছেন, সিএনজি ড্রাইভারের সঙ্গে তর্কাতর্কি করাটা ঠিক হয়নি। রাস্তায় চলতে গেলে এমন অনেক ঘটনাই তো হয়! সুতরাং, সেই সিএনজি ড্রাইভারের সঙ্গে দেখা করে তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করবেন। রাজীব বলেন, ‘এ কারণে সিএনজির নাম্বার থেকে মালিককে খুঁজে বের করি এবং সেখান থেকে ড্রাইভার লিটনের সঙ্গে কথা বলি। পরে দেখা গেলো, সিএনজি ড্রাইভার লিটন ভাইয়ের বাসা আমার বাসার কাছাকাছিই। তার গ্যারেজ এবং বাসা রায়েরবাগ, সানারপাড় এলাকায়। আমার বাসা সাইনবোর্ড। তার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি।’
পরে শাহাদাত রাজীব ড্রাইভার লিটনকে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসেও একই কথা জানান। সেখানেও তিনি বলেন, ‘একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল ড্রাইভারের সঙ্গে। পরে আমরা সেটা মিটমাট করে নিয়েছি। কিন্তু কিছু কিছু মিডিয়ায় ঘটনাটা অতিরঞ্জিত করে লেখা হয়েছে। এটা করা মোটেও ঠিক নয়। আমার জীবনে একটা কালো দাগ পড়েছে আগেই। আমি এ কারণে এখন অনেক সতর্ক। ব্যক্তিগত জীবনকেও অনেক গুছিয়ে নিয়েছি। এখন এগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা মোটেও সমীচিন নয়। আমাকে আমার মত থাকতে দিন।’
ড্রাইভার লিটনও ঘটনার বর্ণনা দেন ফেসবুক লাইভে। সেখানে তিনিও জানান ভুল বোঝাবুঝির কথা। ফেসবুক লাইভে আসার আগেই জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় ড্রাইভার লিটনের। তিনি বলেন, ‘আসাদগেটে আমি সিএনজি চালাচ্ছিলাম। ওই সময় আমি ছিলাম বামে। শাহাদাত ভাই ছিলেন ডানে। আরেকটা সিএনজি এসে আমাকে চাপ দেয়ার কারণে শাহাদাত ভাইয়ের গাড়িতে চাপ দেই। যে কারণে হালকা ঘঁষা লেগেছিল। পরে উনি (শাহাদাত রাজীব) গাড়ি থেকে নেমে আমাকে সাইড করতে বলেন। তখনই তার সঙ্গে কিছুটা তর্কাতর্কি হয়েছে। কিন্তু তিনি যে জাতীয় দলের ক্রিকেটা শাহাদাত রাজীব, সেটা আমি চিনতে পারিনি। চিনলে হয়তো এভাবে তর্ক করতাম না। যাই হোক, বিষয়টা পুরোপুরি ভুল বোঝাবুঝি।’
ড্রাইভার লিটন জানান, তার ওপর শাহাদাত হাত তোলেননি। চড়, থাপ্পড়ও মারেননি।
Advertisement
আইএইচএস/আরআইপি