রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র কলাভবনের ১২৩ নং কক্ষ। ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ। আবছা আবছা আলো। একটা থমথমে অবস্থা। প্রজেক্টর অন। ঘড়ির কাঁটাতে ঠিক আড়াইটা। সিনেমা শুরু। বলছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরে (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রতি রোববার ‘রবিবারের চলচ্চিত্র’ শিরোনামে সিনেমা প্রদর্শনীর নিয়মিত দৃশ্য।বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রদীপ দাস জাগো নিউজকে বলেন, যদি ক্যাম্পাস খোলা থাকে এবং কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তাহলে এই প্রদর্শনী কখনো আড়াইটার এক সেকেন্ডও দেরি হয়নি। এমনকি কখনো কখনো একজন দর্শক নিয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হয়েছে।প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে পথের পাঁচালী, টুয়েলভ ইয়ারস অ্যা স্লেভ, উত্তরের সুর, টু উইমেন, হায়দার, এপোক্যালিপ্টো, দ্য ব্যাটলশিপ পটেমকিন, ঘেটুপুত্র কমলা, জাতিস্মর, গান্ধী’র মতো পুরস্কার বিজয়ী সব চলচ্চিত্র। সর্বশেষ ১২০তম চলচ্চিত্র নায়িকা সংবাদ রোববার প্রদর্শিত হয়েছে।বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলচ্চিত্রের শততম প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের তরুণ পরিচালকদের ছয়টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এগুলো হলো, মাজহারুল রাজুর প্রস্তুতকারক, মেহরাব হোসেনের রঙিন জুতা, হাবিবুর রহমানের আইয়াও, সালমান ফারসীর আগুনরথ এবং মাহফুজা মৌ, আখতারুজ্জামান ও সাইফুন নাহারের জাস্ট অ্যানাদার ডে।বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বিউটি মন্ডল জানান, আমি প্রতিদিন এখানে সিনেমা দেখি। সিনেমা শুরু হওয়ার আগে আমাদের এই সিনেমার লিখিত একটা সারকথা দেয়া হয়। লিখিত কপিতে পরিচালকেরও বর্ণনা থাকে। এটা আমাদের সিনেমাটি সর্ম্পকে চিন্তার পরিধি বাড়াতে ও বুঝতে সাহায্য করে।নিয়মিত চলচ্চিত্র দেখেন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তাওসিয়া তাজমীম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এটা খুবই ভালো একটা উদ্যোগ। এর ফলে আমরা দেশে-বিদেশের অনেক ভালো ভালো চলচ্চিত্র দেখতে পারছি। বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্যান্য বেশ কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত চলচ্চিত্র দেখতে আসেন। এমনি একজন ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হিরু মোহাম্মদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমি ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে মনে করি অনেকগুলো বই পড়ে যতটুকু বোঝা যায় না, সেই বিষয়ের ওপর সিনেমা দেখে তা সহজেই বোঝা যায়। তিনি এ সময় গান্ধী চলচ্চিত্রটিকে উদাহরণস্বরুপ ব্যাখ্যা করে। তিনি আরো বলেন, চলচ্চিত্র এমন একটি মাধ্যম যেখানে জ্ঞানের প্রায় সব স্তরেই স্বল্পবিস্তর আলোচনা করা হয়ে থাকে। অন্য সব বিভাগ থেকে ব্যতিক্রমী চিন্তায় বিভাগে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী সম্পর্কে বিভাগের সভাপতি ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে জাগো নিউজকে বলেন, আসলে আমাদের বিভাগে চলচ্চিত্রের ওপর কোর্স পড়ানো হয়। সেটার কারণেই মূলত বিভাগে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী করা হয়। তাছাড়া গণমাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্রের ভূমিকা অপরিসীম। চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর বিষয়ে তিনি বলেন, চলচ্চিত্র মূলত বিভাগ থেকে দেখানো হলেও এই বিষয়টি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা ম্যাজিক লণ্ঠন পত্রিকার সম্পাদক কাজী মামুন হায়দারের তত্ত্বাবধায়নে হয়ে থাকে।এসএস/এমএস
Advertisement