হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফের ধরা পড়েছে নতুন মাদক ‘এনপিএস’ এর চালান। রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ইউনিটের অভ্যন্তরে অবস্থিত ‘ফরেইন পোস্ট অফিসের’ মাধ্যমে ১৩৫ কেজি এনপিএসের এ চালান আসে।
Advertisement
জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসআই এর দেয়া তথ্যে সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) আটটি কার্টনে আসা ওই এনপিএসের চালান জব্দ করে ঢাকা কাস্টমস হাউজ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী।
বিমানবন্দর কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ইথিওপিয়া থেকে এনপিএস বা খাত এর চালানটি ভারত হয়ে জেট এয়ারওয়েজ হয়ে রোববার দুপুর ২টায় শাহজালালে আসে। পরে তা ‘ফরেইন পোস্ট অফিসে’ নেয়া হয়। এনএসআই এর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তা আজ জব্দ করে কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট প্রথম এর অস্তিত্ব মেলে। ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবা থেকে জিয়াদ মোহাম্মাদ ইউসুফ নামে এক ব্যক্তি ঢাকায় এনপিএসের একটি চালান পাঠান। এ দেশে নওয়াহিন এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে চালানটি পাঠানো হয়। চালানটি কয়েক দিন আগে ইথিওপিয়া থেকে কয়েকটি দেশ ঘুরে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে।
Advertisement
এরপরই দুই দফার অভিযানে বিমানবন্দর ও শান্তিনগর প্লাজা থেকে মোট ৮৬১ কেজি এনপিএসসহ মো. নাজিম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার হওয়া এনপিএস’র আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ২৯ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা।
এরপর দ্বিতীয় দফায় ৬ সেপ্টেম্বর ভারত থেকে আগত জেট এয়ারওয়ের ৯ডব্লিও২৭৬ ফ্লাইটে এনপিএস এর চালান আসে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে নজরদারি শুরু করে বিমানবন্দর কাস্টমস কর্মকর্তারা। পরে ফরেইন পোস্ট অফিসের মাধ্যমে সেগুলো আটক করা হয় এবং পর্যবেক্ষণে রেখে ‘গ্রীন টি’ এর মতো দেখতে পণ্যগুলো জব্দ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে এনপিএস (নিউ সাইকোট্রফিক সাবসটেনসেস) হিসেবে ধারণা করা হয়। পরবর্তীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহযোগিতায় একজন ফরেনসিক এক্সপার্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় জব্দকৃত ওই কার্টনের পণ্যগুলো এনপিএস। ওজনে ১৬০ কেজি।
জানা যায়, ওই পণ্যগুলোর রফতানিকারকের নাম জিয়াদ মুহাম্মদ ইউসুফ। ঠিকানা আদ্দিস আবাবা, ইথিওপিয়া। আর আমদানিকারক এশা এন্টারপ্রাইজ। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকার তুরাগ থানাধীন ব্লক-ডি, সড়ক ২ হাউস নং-২৮।
Advertisement
এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার বলেন, ‘এনপিএস অপব্যবহারের পদার্থ, যা ১৯৬১ সালের প্রচলিত মাদক আইন অথবা ১৯৭১ সালের ওষুধ আইনে নিয়ন্ত্রণযোগ্য নয়। যদিও জনস্বাস্থ্যের জন্য এটা প্রচণ্ড রকমের ক্ষতিকর। পণ্যটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ এর ‘খ’ তফসিলে ২ নং ক্রমিকভুক্ত, যা একই আইনের ১৯ (১) টেবিলের ১০ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এনপিএস তৈরির উপাদানগুলো বৈধ হলেও এর ভয়াবহতার কারণে অনেক দেশ স্থায়ীভাবে এনপিএস নিয়ন্ত্রণ করছে। অনেক দেশ অস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধও করছে। এনপিএসের ব্যবহার ব্যাপকমাত্রা পেলে যুবসমাজ ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হবে।’
জেইউ/এসআর/জেআইএম