চলতি মাসেই ভুটানের তৃতীয় সাধারণ নির্বাচন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ও ১৮ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক দেশবাসীর পক্ষে হিতকর তা নিয়ে চলছে নির্বাচনী যুদ্ধ। ভারত না চীন-কোন দিকে ঝুঁকবে ভুটানিরা, তা এ নির্বাচনের রায়ই বলে দেবে।
Advertisement
২০০৭ সালে ভুটানে প্রথম নির্বাচনী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার শুরু। বলা হচ্ছে, ক্ষমতার মসনদে কে বসবে-সেই প্রশ্নে এই নির্বাচনের আয়োজন করা হলেও এর মাধ্যমে ভারত অথবা চীন যেকোনো একটিকে বেছে নেবে ভুটানের জনগণ।
ভুটানে সাধারণত দুই দফায় ভোট হয়ে থাকে। প্রথম দফায় ভোটাররা রাজনৈতিক দলগুলোকে ভোট দেয়। যে দুই দল প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান পায়, তারা পার্লামেন্টের ৪৭টি আসনে প্রার্থী দেয় এবং তখন দ্বিতীয় দফা ভোট হয়। এবারের প্রথম দফার ভোটে চারটি দল অংশ নিচ্ছে।
গত বছরে চীন-ভুটান-ভারত সীমান্তে আধিপত্যের বাড়াবাড়ি নিয়ে উত্তাল হয়েছিল আন্তর্জাতিক কূটনীতি। ভারত-চীনের মধ্যে যুদ্ধের পরস্থিতিও তৈরি হয়েছিল। সেই উত্তেজনা স্থায়ী ছিল দীর্ঘ ৭৩ দিন। যদিও ভুটান প্রশাসন সেই সময় ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছিল।
Advertisement
এসব ঘটনার পর দেশটিতে তৃতীয় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক। নির্বাচনী প্রচারে এখন প্রশ্ন হয়ে উঠছে, কোন দলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেমন। ভুটান চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে কি না এবং না করার কী কারণ থাকতে পারে—এরকম গুঞ্জনও নির্বাচনী প্রচারে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক চাইছে চীন। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে ভুটান।
চীন প্রীতির কারণেই ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জিগমে থিনলে বিপাকে পড়েছিলেন। ভুটানের ওপরে গ্যাসের ভর্তুকি প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। যার জেরেই গত নির্বাচনে তাকে পরাস্ত হতে হয়।
অন্যদিকে দিল্লির সমর্থন নিয়ে জিতে যায় পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি। গ্যাসের ভর্তুকিও ফিরে পায় ভুটান।
পাঁচ বছর পরে আবার নির্বাচনের সামনে ভুটান। তবে এবার চীনের প্রভাব বেড়েছে ওই দেশে। যার অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে ভুটানে চীনা পর্যটক বৃদ্ধি। যার ফলে অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে থিম্পুর। এছাড়াও বোদ্ধ ধর্মের প্রভাবও রয়েছে। যদিও ওই দেশের অর্থনীতির শতকরা ৮০ ভাগই ভারত নির্ভর। চুখা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপরে কেন্দ্র করেই চলছে ভুটানের অর্থনীতি। এই অবস্থায় কোন পক্ষে রায় দেবে ভুটানবাসী সেদিকেই তাকিয়ে দিল্লি এবং বেইজিং।
Advertisement
এসআর/জেআইএম