উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে গবেষণার ক্ষেত্র উন্নত দেশগুলোর তুলনায় বেশ সংকুচিত। তবুও সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যে বাংলাদেশী গবেষক ও বিজ্ঞানীরা দেশে-বিদেশে নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা গেলে নতুন নতুন উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তারা যে আরও কৃতিত্বের প্রমাণ দিতে পারবেন তার প্রমাণ এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। এবার কবিষবিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ইলিশের জিনোম রহস্য উদ্ভাবন করেছেন।
Advertisement
চারদিক থেকে যখন নানামুখী দুঃসংবাদ আর নেতিবাচক ঘটনার সমারোহ তখন ইলিশের জিন রহস্য উদ্ভাবনের বিষয়টি নিঃসন্দেহে দেশবাসীর জন্য একটি বড় সুসংবাদ।
এ গবেষণা বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে ইলিশের সংখ্যা, বিভিন্ন মোহনায় প্রজননকারী ইলিশ কি ভিন্ন ভিন্ন ‘স্টক’ নাকি এরা সবগুলো একটি স্টকের অংশ, বাংলাদেশের ইলিশ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের (ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য) ইলিশ থেকে জেনেটিক্যালি স্বতন্ত্র কি না ইত্যাদি বিষয়ে জানতে সহায়তা করবে।
এছাড়া এর মাধ্যমে বাংলাদেশি ইলিশের একটি রেফারেন্স জিনোম প্রস্তুত করা যাবে। ইলিশের জিনোমিক ডেটাবেজ স্থাপন করা যাবে; যা যাবতীয় বায়োলজিক্যাল তথ্য ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করবে। যা ইলিশের বিভিন্ন পপুলেশনের বিস্তৃতি এবং বিভিন্ন উপ-পপুলেশনের উপস্থিতি ও তাদের মধ্যে ইকোলজিক্যাল আন্তঃসংযোগের মাত্রা নির্ণয় করবে।
Advertisement
দেশের গবেষণা ক্ষেত্রটি এখনও অনেকটাই সীমিত। গবেষণা খাতে বরাদ্দও কম। এরপরও সীমিত সাধ্যের মধ্যেই বিজ্ঞানীরা যে সাফল্য দেখাচ্ছেন সেটি অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারে এ যুগে সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদেরও গবেষণা ক্ষেত্র আরও বাড়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে ইলিশ গবেষণায় বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখিয়েছে সেটিকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের অর্থের কমতি থাকতে পারে, কিন্তু মেধাবী এবং দেশের জন্য কাজ করার মানুষের যে অভাব নেই সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, সর্বত্র নৈরাজ্যজনক রাজনীতিকরণের কবল থেকে আমাদের দেশের গবেষণা ক্ষেত্রটিও মুক্ত নয়।
দেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে যত বেশি আলোচনা হয় তার কিয়দশংও যদি অন্যান্য ক্ষেত্র, বিশেষ করে গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়ে সাফল্যের জন্য হতো তাহলে গবেষণা ক্ষেত্রটা এগিয়ে যেত। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার আমাদের গবেষণার ক্ষেত্রটি আরও সমৃদ্ধ হতো।
এইচআর/জেআইএম
Advertisement