ডেঙ্গুজ্বর সাধারণ জ্বরের মতোই ভাইরাসজনিত একটি জ্বর। সাধারণত এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু ভাইরাস আমাদের দেহে প্রবেশ করে। তবে টাইফয়েড কিংবা সাধারণ জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গুজ্বরের মূল পার্থক্য হলো ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথম দিন থেকেই প্রচন্ড জ্বরে যেমন ১০২-১০৩ ডিগ্রি জ্বরে ভুগে থাকেন। লক্ষণ :ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে রোগীর জ্বরের সঙ্গে প্রচন্ড শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনের অংশে ব্যথা, পেটে ব্যথা, দেহের পেছনের অংশে ব্যথা অনুভূত হয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর বমি হওয়া, খাওয়াতে অরুচিসহ শরীরে প্রচন্ড ক্লান্তি হতে পারে ও সেই সঙ্গে শরীরে লাল চাকাসহ দাগ, দাঁত মাজার সময় রক্ত পড়া ও পায়খানার রঙ কালো হতে পারে। করণীয় :ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, রোগীদের অ্যাসপিরিন অথবা অন্য কোনো জ্বরের বা ব্যথার ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো সাহায্য করে না। জ্বর কমানোর জন্য রোগী শুধু প্যারাসিটামল সেবন করতে পারে। ডেঙ্গুজ্বর হলে রোগীকে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। যেমন পানি, খাওয়ার স্যালাইন, স্যুপ, দুধ, তাজা ফলের রস ও শিশুদের মায়ের দুধ ইত্যাদি রোগীর জন্য পথ্যের মতো কাজ করে। অনেক ক্ষেত্রে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে শরীরে অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে দেহে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। আর এ পানিশূন্যতায় কোষের ভেতরের তরল কমে যায় এ কারনে কোষের চারপাশের রক্তনালিতে চাপ পড়ে। রক্তনালিতে চাপের কারণে দেহের ভেতর শুরু হয় ইন্টারনাল ব্লিডিং বা রক্তক্ষরণ আর এ জন্য রক্তের প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা কমতে থাকে। এই অনুচক্রিকা কমার কারণে দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে না, ফলে রক্তক্ষরণ আরও বাড়তে থাকে ও রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। আর দেহে এভাবে প্লেটলেট কমতে থাকলে একসময় শক সিনড্রোমের কারণে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। তাই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রতিদিন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের প্লেটলেটের মাত্রা জানতে হবে ও প্রয়োজনে বাইরে থেকে রোগীর দেহে প্লেটলেট সরবরাহ করতে হবে। সঠিক চিকিৎসা পেলে ডেঙ্গুজ্বরে এখন রোগী মারা যায় না। তাই ডেঙ্গুজ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা নিন। এইচএন/এমএস
Advertisement