সাফ গেমসে কাতারকে হারিয়ে দেয়া ম্যাচের অন্যতম নায়ক ছিলেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। তাকেই ধরা হয় বাংলাদেশের এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবে। কিন্তু হঠাৎ করেই নীলফামারীতে অনুষ্ঠিত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে আশরাফুল ইসলাম রানাকে বাদ দিয়ে দলে নেয়া হলো গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেলকে।
Advertisement
তখনই ভ্রু কুঁচকে গিয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের। আবাহনীর এই গোলরক্ষককে দলে রাখা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় তখন থেকেই। আশরাফুল ইসলাম রানাকে বাদ দিয়ে হঠাৎ করে কেন সোহেলকে দলে রাখা হলো? ফুটবলাঙ্গনে এ প্রশ্ন শুরু হয় চারদিক থেকে।
ইংলিশ কোচ জেমি ডে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ফুটবল দলকে ঢেলে সাজানো চেষ্টা করছিলেন। এশিয়ান গেমস, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ- গুরুত্বপূর্ণ তিনটি টুর্নামেন্ট এবং আসরকে সামনে রেখে শুরু করা হয় প্রস্তুতি।
কোচ জেমি ডে ক্যাম্প পরিচালনা করেন, শহিদুল আলম সোহেল ছিলেন সেই ক্যাম্পেরই বাইরে। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়া পরিচালিত ক্যাম্পে জেমি ডে রাখেননি গোলরক্ষক সোহেলকে।
Advertisement
কিন্তু এশিয়ান গেমসের পর সেই কোচ জেমি ডে’রই সুর পরিবর্তন! তিনি গোলরক্ষক সোহেলকে সরাসরি একাদশে নিয়ে আসলেন। নীলফামারীতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফিফা ফেন্ডলি ম্যাচে একাদশে নিয়ে আসা হয় তাকে। ওই ম্যাচেই দুর্বল শ্রীলঙ্কার কাছে জঘন্য এক গোল খাওয়ার পর একাদশে সোহেলকে খেলানো নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে তখন।
তবুও কোচ নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে পারেননি। সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি টুর্নামেন্টে তিনি খেলিয়েই গেছেন শহিদুল আলম সোহেলকে। প্রথম দুই ম্যাচে ভালোই পোস্ট সামলেছিলেন তিনি। কিন্তু শহিদুল আলমের মতো গোলরক্ষকরা মোক্ষম সময়ে এমন একটি ভুল করে বসেন, যে ভুলের প্রায়শ্চিত্য করারও সুযোগ থাকে না।
নেপালের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই সেই ভুলটি করে বসলেন শহিদুল আলম রানা। বিমল ঘার্তিমাগারের ৪০ গজ দূর থেকে নেয়া দুর্বল ফ্রি-কিক হাতের মধ্যে নেয়ার পরও ছেড়ে দিলেন। ধরে রাখতে পারলেন না। তার ক্ষমার অযোগ্য এই ভুলের কারণেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ এবং শেষ পর্যন্ত হেরে বিদায় নিতে হয় গ্রুপ পর্ব থেকেই।
ক্যাম্পে না থাকার পরও শহিদুল আলম সোহেলের দলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এখন গুঞ্জন উঠেছে বেশ। এখানে জাতীয় দলের চেয়ে ক্লাব প্রীতি প্রাধান্য পেয়েছে কি-না চলছে সেই আলোচনা। সোহেল যে আবাহনীর গোলরক্ষক! জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্বেও আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু।
Advertisement
অতীতের মতো ক্লাব নীতির কারণেই জাতীয় দলের সর্বনাশ ডেকে আনা হচ্ছে কি না- এখন সেই প্রশ্নই উঠে গেছে সাফের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ার পরপরই। যেখানে কোচ জেমি ডে’ই হয়তো হয়ে পড়বেন বলির পাঁঠা। নিজের পছন্দের সেরা দল তিনি স্বাধীনভাবে বাছাই করতে পেরেছিলেন কি-না, নাকি পর্দার আড়ালের চাপের কারণে আশরাফুল ইসলাম রানাকে বাদ দিয়ে দলে নিয়েছেন সোহেলকে- সেটাও এখন নাড়া দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফুটবল অঙ্গনকে।
আইএইচএস/