অর্থনীতি

ঈদের প্রভাবে কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি

গেল মাসে কমেছে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার। যদিও ঈদ কেন্দ্র করে বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে বলে মাসখানেক আগে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর আগের বছরগুলোতে কোরবানির ঈদে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু এবার তা হয়নি।

Advertisement

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন বলছে, চাল, মাছ, ডিম ও মসলার দাম বাড়লেও আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে। আগের মাসে এর হার ছিল ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার এক পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ‘মিট দ্যা প্রেস’ এ প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট (গতবছরের একই সময়ের তুলনায়) ভিত্তিতে গত মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে ব্যাপক হারে। গত মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। জুলাই মসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৮ ভাগ।

Advertisement

আর গত বছরের আগস্টে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। মাসিক ও বার্ষিক হিসাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টে কমেছে।

খাদ্যবহির্ভূত অন্যান্য পণ্যে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে বলে প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে। বলা হয়েছে, আগস্টে খাদ্য ছাড়া অন্যান্য উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্ট মাসে খাদ্য বহির্ভূত খাতে পণ্যমূল্য বেড়েছিল ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে পণ্যেও দাম খুব একটা বাড়েনি। এ সময় বাজার নিয়ন্ত্রণেই ছিল। চাহিদা ও যোগানে বড় ধরনের কোন অসামঞ্জস্য ছিল না। প্রয়োজনীয় পণ্য অনেক আগেই আমদানি করে রাখা হয়েছিল। এসব কারণে সার্বিক মূল্যস্ফীতি খুব একটা বাড়েনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে চাল, মাছ, মাংস, ডিম, মসলা ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর দাম বেড়েছে। অন্যদিকে পরিধেয় বস্ত্র, শিক্ষা উপকরণ, বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ, পরিবহন ভাড়া, চিকিৎসা সেবাসহ বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে কিছুটা মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

Advertisement

প্রতিবেদনে তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে পল্লি এলাকায় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ। আর শহর এলাকায় আগস্টে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। পল্লী ও শহর এলাকায জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৪ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

পল্লি এলাকায় আগস্টে খাদ্যপণ্যে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে পল্লী এলাকায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। একই সময়ে পল্লী এলাকায় খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৫১ শতাংশ।

জুলাই মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে পল্লী এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

অন্যদিকে শহর এলাকায় আগস্টে খাদ্যপণ্যে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে শহর এলাকায় খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।

একই সময়ে শহর এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। জুলাই মাসে এর হার ছিল ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত বছরের আগস্টে পল্লী এলাকায় খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১২ মাসে গড়ে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ হিসাবে গড় মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে।

এমএ/এমআরএম/জেআইএম