বিশেষ প্রতিবেদন

নতুন চাপে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

বেসরকারি চাকরিজীবী ফজলুল হক। রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ুয়া মেয়ের জন্য ৩০০ পৃষ্ঠার লেখার খাতা ঈদের আগে কিনতেন ৬০ টাকায়। এখন তা কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকা দিয়ে। প্রতি মাসে চার থেকে পাঁচটি খাতা কিনতে হয় তার।

Advertisement

এক মেয়ে বলে খরচটা হয়তো খুব বেশি মনে হয় না ফজলুল হকের। কিন্তু এই শহরে যাদের স্কুল-কলেজগামী ৩/৪ জন সন্তান আছে, তাদের ব্যয় অনেকটাই বেড়েছে। অর্থাৎ পড়ালেখার ব্যয় নিয়ে নতুন চাপে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।

সাধারণ মানুষ বলছেন, এমনিতেই মূল্যস্ফীতির যাঁতাকলে অতিষ্ঠ তারা। বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। খুব হিসাব-নিকাশ করে সন্তানদের পড়ালেখার ব্যয় মেটাতে হচ্ছে। কেননা ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের বৈষম্য ক্রমেই বাড়ছে। এই অবস্থায় শিক্ষার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে খাতার ব্যয় কমানো জরুরি বলে মনে করছেন তারা।

গত রোববার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকার ভেদে প্রতিটি লেখার খাতার দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানান, গত এপ্রিল মাস থেকে দেশের বাজারে সব ধরনের কাগজের দাম বাড়তি। যার প্রভাব পড়েছে লেখার খাতায়ও। লেখার সব ধরনের তৈরি খাতার দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩৫ শতাংশ। তবে দিস্তার কাগজের দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এক দিস্তা কাগজের দাম বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা। শতকরা হিসাবে যা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।

কথা হয় স্টেশনারি ব্যবসায়ী আবির হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, খাতার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা নানা প্রশ্ন করছেন। সবাই বলছেন, আমরা ইচ্ছা করে দাম বাড়াচ্ছি। বাস্তবতা বলেও বিশ্বাস করানো যায় না। পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে, ফলে আমরাও বাড়াতে বাধ্য হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিও কমে যাচ্ছে। অনেকে একাধিক দোকান যাচাই করে তারপর কিনছেন। অনেকে আবার পরে কিনবেন বলে চলেও যাচ্ছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তুলনামূলকভাবে তৈরি খাতার চেয়ে দিস্তা কাগজের দাম কম বেড়েছে। আগে এক দিস্তা কাগজ বিক্রি হতো ১৮ থেকে ২০ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকায়। এ হিসাবে দিস্তা কাগজের দাম খুব একটা বাড়েনি। তবে কাগজের মান আগের চেয়ে কিছুটা হলেও কমেছে।

Advertisement

মিরপুরের ‘স্টপ অ্যান্ড গো’ স্টেশনারির মালিক হোসেন বলেন, আগে যে খাতা ৬০ টাকায় বিক্রি করতাম, এখন তা কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায়। সুতরাং এ খাতা ৮০ টাকার নিচে বিক্রির কোনো উপায় নেই। বড় খাতার মতো ছোট খাতাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যে খাতার দাম ছিল ১৫ টাকা এখন সেই খাতা ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অশ্রু নামে এক শিক্ষার্থী জানান, কোনো কিছুর দাম কমতে দেখি না। নোট বইয়ের দাম বেড়েছে, খাতার দামও বেড়েছে। এভাবে ব্যয় বাড়তে থাকলে পড়ালেখা করাই কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ বাবার আয় আগের মতোই আছে।

এমএ/এমএমজেড/এমএআর/পিআর