ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা, অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এবং সাবমেরিন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে ইরান। প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে এ পরিকল্পনা করেছে তেহরান। দেশটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
Advertisement
ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা ইরনা (আইআরএনএ) বলছে, ইরানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ আহাদি গত শনিবার বিশ্ব সামরিক শক্তিধর দেশগুলোর একটি প্রতিনিধি দলের কাছে এ ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য দেন।
রাজধানী তেহরানে তিনি বলেন, ব্যালিস্টিক ও সামুদ্রিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা এবং আগামী প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত শক্তিশালী এবং দূরপাল্লার সাবমেরিন সক্ষমতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয়।
ভবিষ্যত পারমাণবিক পরিকল্পনা, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ এবং চলমান আঞ্চলিক দ্বন্দ্বে ইরানের ভূমিকা নিয়ে ফ্রান্সের দেয়া আলোচনা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কয়েকদিন পর এমন মন্তব্য করলেন ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় ক্ষমতাধর দেশের পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার পর তেহরানের ওপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের জবাবে নতুন এই পরিকল্পনার কথা জানালো দেশটি।
Advertisement
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইরানের আইনজীবীরা আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে তেহরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া এ নিষেধাজ্ঞা ১৯৫৫ সালে দু'দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ব্ন্ধুত্ব চুক্তির শর্তের লঙ্ঘন।
ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের অস্ত্রশিল্পের উন্নয়নকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো রয়েছে। যার মাধ্যমে আমরা সাধ্যমতো গবেষণা এবং উন্নয়ন করতে পারবো। এছাড়া একই সময়ে আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করতে পারবো। কেননা আমাদের আছে নির্ভর করার মতো উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈজ্ঞানিক সক্ষমতা এবং প্রকৌশল শিক্ষায় শিক্ষিত হাজার হাজার দ্ক্ষ নাগরিক।
তিনি সিরিয়া ও ইরাকে ইরানের নেয়া পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পরাজিত করতে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলো ইরান।
যদি ইরান এবং তার মিত্র দেশগুলো আইএসকে দমন না করতো তাহলে আজকে এই অঞ্চলের মানচিত্রই বদলে যেতো এবং গোটা বিশ্বকে একটা ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হতো।
Advertisement
চলতি বছরের আগস্টে ইরান একটি নতুন দেশীয় যুদ্ধবিমান অবমুক্ত করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি সম্পূর্ণ দেশীয়ভাবে তৈরি প্রথম যুদ্ধবিমান। সেসময় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, দেশের সামরিক শক্তিতে নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে যা শত্রুদের ভীত করবে এবং দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের এই সামরিক শক্তিতে আঘাত হানতে গেলে দু'বার ভাবতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।
ইরান এবং অন্য শক্তিধর দেশগুলোর করা যুগান্তকারী পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৫ সালের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেরিয়ে আসার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দু'দেশের সম্পর্কে মারাত্মক ফাঁটল ধরে।
সূত্র : আলজাজিরা।
এসআইএস/পিআর