চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে ‘হার্ট অ্যাটাকে’ শতাধিক হাজির মৃত্যু হয়েছে। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সৌদি চিকিৎসকদের দেয়া মৃত্যুসনদে বাংলাদেশি হাজিদের শতকরা ৯৮ ভাগের ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ ‘হার্ট অ্যাটাক’ উল্লেখ করা হয়।
Advertisement
অথচ বাংলাদেশের চিকিৎসকরা হাজিদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে যে সনদ দিয়েছেন সেখানে তারা হৃদরোগী ছিলেন- এমনটি লেখা হয়নি।
বাংলাদেশের চিকিৎসকরা রোগের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ না করার কারণে সৌদি চিকিৎসকরা রোগীদের তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা প্রদানে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
বাংলাদেশ হজ মিশন, মক্কা ও বাংলাদেশ হজ মেডিকেল সেন্টারের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মক্কা থেকে প্রকাশিত হজ বুলেটিন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) পর্যন্ত হজের আগে ও পরে সৌদি আরবে সর্বমোট ইন্তেকাল করেছেন ১০৫ জন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮৭ জন ও মহিলা ১৮ জন। এদের মধ্যে মক্কায় ৬৮ জন, মদিনায় ৭ জন, জেদ্দায় ২ জন, মিনায় ১৮ ও আরাফায় ১০ জন মারা যান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তথ্য গোপন করে বহু হৃদরোগী বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ হজযাত্রী সৌদি যান। মূল হজের পাঁচদিন মক্কা থেকে মিনা, মুজদালিফা ও আরাফায় হজযাত্রীদের মারাত্মক পরিশ্রম করতে হয়। প্রত্যেক হাজিকে মাইলের পর মাইল হেঁটে, খেয়ে না খেয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হয়। এক্ষেত্রে বৃদ্ধদের কষ্ট বেশি হয়। বিশেষ করে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি ও প্রেসারের রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়।
বাংলাদেশ হজ মিশনে কর্মরত আইটি কর্মকর্তা রাশিদুল হাসান লিটন জানান, এ পর্যন্ত যত হাজি মারা গেছেন তাদের শতকরা ৯৮ ভাগের মৃত্যুসনদে সৌদি চিকিৎসকরা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশ হজ মেডিকেল টিমের লিডার কর্নেল এসএম শহীদুল হক বলেন, অতিরিক্ত গরম ও পরিশ্রমের কারণে অনেক হাজি বিশেষত বয়স্করা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
Advertisement
উল্লেখ্য, চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট হজযাত্রীর সংখ্যা এক লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ জন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট গত ২৭ আগস্ট শুরু হয়। শেষ ফিরতি ফ্লাইট আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর।
এমইউ/বিএ/জেআইএম