অর্থনীতি

পুঁজি পাচার : কাগজের বদলে বালু-মাটি!

'ডাবল এ ফোর' কাগজ আমদানির জন্য এলসি খুলেছিল ঢাকার বনানীর প্রগ্রেস ইমপেক্স লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। চীন থেকে আনা সে পণ্য পরীক্ষার সময় কনটেইনারে পাওয়া গেছে বালু-মাটি। শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার পরীক্ষায় বিষয়টি ধরা পড়ে।

Advertisement

এআইআর শাখার উপ-কমিশনার মো. নূর উদ্দিন মিলন জাগো নিউজকে জানান, প্রগ্রেস ইমপেক্স লিমিটেড নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের এলসির বিপরীতে চীন থেকে ২০ ফুট কনটেইনারে ১৯ হাজার ৬৫৬ কেজি 'ডাবল এ ফোর' কাগজ আসার কথা ছিল। চালানটি খালাসের দায়িত্বে ছিল চট্টগ্রামের ৯৩৬, শেখ মুজিব রোডের সাজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। কিন্তু দুপুরে বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার (এনসিটি) টার্মিনালে কনটেইনারটির কায়িক পরীক্ষা করে দেখা যায় কাগজের নামে এসেছে বালু-মাটি।

কাস্টমস হাউস সূত্র জানায়, গত ২৬ আগস্ট চীনের তিয়েনজিংগ্যাং বন্দর থেকে 'হ্যাপি বি' নামের একটি জাহাজে কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। চালানটির শুল্কায়ন মূল্য ছিল ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪১০ টাকা। এর ভিত্তিতে শুল্ক বাবদ ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩৭২ টাকা পরিশোধ করা হয় কাস্টমস হাউসের অনুকূলে।

আরও পড়ুন >> ৩ কোটির এলসিতে হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি

Advertisement

কাস্টমস হাউস সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে বিভিন্ন সময় মূল্যমান পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়ে ইট, পাথর, বালু বা মাটিভর্তি কনটেইনার আসার ঘটনা ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে খালি কনটেইনারও আসছে। এ ছাড়া বেশি কিংবা কম মূল্য দেখিয়ে (আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিং) আমদানি-রফতানির ঘটনাও ঘটছে। তবে অর্থ পাচারের জন্য এসব জালিয়াতি হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সন্দেহ করছে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড.মইনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ব্যাংক, বিদেশি রফতানিকারকসহ বিভিন্ন পক্ষের যোগসাজশে ভুয়া এলসি খুলে দেশ থেকে পুঁজি পাচারের ঘটনা বেশ আগ থেকেই ঘটছে। এ ছাড়া ওভার ইনভয়েসিং (আমদানিতে বেশি মূল্য) কিংবা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের (রফতানিতে কম মূল্য) মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে। সম্প্রতি এ ধরনের ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। এখন আর শুধু সেকেন্ড হোম তৈরির জন্য নয়, তারা বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগের জন্য পুঁজি পাচার করছেন।’

আবু আজাদ/এমএমজেড/জেআইএম

Advertisement