দেশজুড়ে

পাহাড়ে চলছে ধান কাটার উৎসব

পূর্ব আকাশে সূর্য উঠবে উঠবে ভাব পাহাড়ের গায়ে হালকা আলো পড়তে শুরু করেছে ঠিক তখনি মাথায় ঝুঁড়ি আর সঙ্গে দুপুরের খাবার নিয়ে পাহাড়ি জনপদের নারী-পুরুষেরা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে দূর পাহাড়ের উদ্দেশে। কারণ এখন পাহাড়ের জুমের ধান কাটার সময়। পাহাড়ি জনপদে এখন ধান কাটার মহাউৎসব চলছে। সকলে মেতেছেন এ উৎসবে।

Advertisement

পাহাড়ি অঞ্চলে পাহাড়ের ঢালু গায়ে উৎপাদিত হয় ধান। এই অঞ্চলে এ ধান ‘জুমের ধান’নামে পরিচিত। এই সময়টাতে জুম ধান পেকে সোনালী রঙ ধারণ করে। তাই তো এ ধান কেটে মাথার ঝুঁড়ি ভর্তি করে বাড়ি ফেরার জন্য সকলে এখন ভীষণ ব্যস্ত।

বড়াদম গ্রামের প্রয়াতি চাকমা। সকাল হতে না হতেই বেরিয়ে পড়েছে জুম ধান কাটার উদ্দেশে। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল পর্যন্ত চলবে ধান কাটার এই আয়োজন। তিনি বলেন, পাহাড়ের ঢালু গায়ে আমরা ধানের চাষ করে থাকি। যাকে জুমের ধান নামেই জানি। আমরা বছরে একবারই এই ধান চাষ করি। এখন সে ধান পাকতে শুরু করেছে। তাই গ্রামের সকলে এখন ধান কাটায় ব্যস্ত।

তিনি আরও বলেন, জুমের এ ধান দিয়ে আমাদের সারা বছর চলবে। বছরের অন্য সময়ে আমরা বিভিন্ন দিনমজুরির কাজ করি কিংবা পাহাড়ের এই জমিতে লাউ, বরবটি, সিম, হলুদ, আদা, কচুসহ অন্যন্যা সবজির চাষ করে থাকি।

Advertisement

একই গ্রামের চাষি রাঙ্গামালা চাকমা বলেন, বছরের এ সময়ে আমরা পাহাড়ে ধান চাষ করে থাকি। আর এ ধান দিয়ে আমরা চাউল তৈরি করব যা আগামী এক বছরের জন্য আমাদের পরিবারের লোক সংখ্যা অনুসারে পরিমাণ মত রেখে বাকিগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিব।

রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, পাহাড়ে বছরের এই সময়টাতে চলে জুমের ধান কাটার উৎসব। এখন পাহাড়ি জনপদের সকল নারী-পুরুষ জুমের ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছে। পাহাড়ি এ অঞ্চলে যদিও খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে। তবুও মোটামুটি ধান উৎপাদন হয়। খাদ্য ঘাটতির অন্যতম কারণ দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ২০১৭-১৮ বছরে পাহাড়ে আউশ ধান উৎপাদিত হয়েছে ৮,২৯৫ মে. টন, আমন ধান উৎপাদিত হয়েছে ২৫,১২৭ মে.টন, বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে ৩০,৬৫৪ মে.টন। যা সর্বমোট ৬৪,০৭৬ মে.টন ধান।

আরএ/এমএস

Advertisement