প্রাণঘাতী ‘মোমো চ্যালেঞ্জ সুইসাইড গেম’ এর চক্করে পড়ে এবার আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক যুবক।
Advertisement
রাজ্যের পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ২ ব্লকের তুরকা এলাকার বাসিন্দা কালাচাঁদ দাস (২৫) ‘মোমো’ গেমের এই চক্করে পড়েছেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
এ বিষয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও করেছেন কালাচাঁদ দাসের বাবা-মা। পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শও নিয়েছেন তার।
কালাচাঁদের জেঠাতো ভাই অরবিন্দ দাস বলেন, গত রোববার রাত দেড়টার দিকে ভাই (কালাচাঁদ) আমাকে ফোন করে বলে- ‘আমার বাঁচার ইচ্ছে নেই। ইহজগতে নয়, আমাকে পরজগতে ডাকছে। আমি সেখানে চললাম।’ এই বলে ফোন কেটে দেয়। পরে আমি তাকে ফোন ব্যাক করি। কিন্তু সে ফোন ধরেনি। তখন বাড়িতে খবর দেই। বাড়ির লোকজন উঠে দেখেন- কালাচাঁদ ঘরের দরজা খুলে বাইরের দিকে ছুটছেন।
Advertisement
কালাচাঁদের বাবা কানাই দাস জানান, ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় কালাচাঁদকে আটকাতে গেলে সে বলে- ‘আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মরে যাব। মোমো আমাকে ডাকছে।’ পরে অনেক কষ্টে তাকে আটকানো হয়। সেই সময় তার পকেটে একটি দড়িও পাওয়া গেছে।
ছেলেকে বাঁচাতে মোবাইলটি ভেঙে পুকুরে ফেলে দেন কানাই।
তিনি বলেন, ‘এমনিতে কালাচাঁদ কথা কম বলে, স্বভাবও চাপা। তবে ওই ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই রাত থেকেই ছেলে বদলে গেছে। কেমন গুমট হয়ে বসে আছে। কারো সঙ্গে কথা বলছে না। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’
আবেদ বক্স নামে এক প্রতিবেশীও বলেন, ‘ছেলেটির মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করছি। এই ধরনের মারণ গেম বন্ধ হওয়া উচিত।’
Advertisement
এদিকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমে ওই যুবকের ডায়েরির পাতায় লেখা সুইসাইড নোট পেয়েছে পুলিশ। কালাচাঁদের ডায়েরির একটি পাতায় লেখা- ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। মোমো অ্যাপসে চোখের দৃষ্টি পড়লেই মরে।’
অন্যদিকে একই জেলার নারায়ণগড় এলাকার এক ছাত্রও তার মোবাইলে মোমো মেসেজ আসার দাবি করেছে। নরোত্তম দোলাই নামে দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইলে মোমোর মেসেজ আসে। হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়, একটি লিংকও পাঠানো হয়। মেসেজ করে অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আমার ছবি পাঠাতে বলেছিল। ভয় পেয়ে এক শিক্ষককে সব জানালে তিনি আমাকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
এমবিআর/এমএস