আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনের তারিখ ষষ্ঠ দফায় পেছানো হয়েছে। মামলার চার্জ গঠনের পরবর্তী তারিখ আগামি ১৮ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত। ফলে আসামিদের অসুস্থতায় ঘুরপাক খাচ্ছে মামলার কার্যক্রম।সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মকবুল আহসান মামলার অন্যতম আসামি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিত থাকায় অভিযোগ গঠনের তারিখ পিছিয়ে দেন। সিলেটে মামলার আসার পর ছয়দফা শুনানি হলেও একদিনও মেয়র আরিফকে আদালতে হাজির করা হয়নি। বরাবরই আরিফ অসুস্থ আছেন বলে জানানো হয়।এ নিয়ে ষষ্ঠ দফা চার্জ গঠনের তারিখ পেছালো। এর আগে ২১ জুন, ৬, ১৪, ২৩ জুলাই ও ৩ আগস্ট আলোচিত এ মামলার চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়।আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সোমবার বহুল আলোচিত এই মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানি চলাকালে চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, হুজির শীর্ষ জঙ্গী নেতা মুফতি হান্নান, হবিগঞ্জ পৌরসভার বরখাস্ত হওয়া মেয়র জি কে গৌছসহ কারাগারে আটক ১৪ জন আসামির ১৩ জনই আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। সরকারের পক্ষে মামলার আইনজীবী সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর জাগো নিউজকে জানান, সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার পূর্ব নির্ধারিত চার্জ গঠনের তারিখ ছিল সোমবার।কিন্তু মামলার অন্যতম আসামি আরিফুল হক চৌধুরী আদালতে হাজির না থাকায় চার্জ গঠন হয়নি। এজন্য বিচারক ১৮ আগস্ট চার্জ গঠনের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন।আসামি পক্ষের মামলরে শুনানি করেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল খালিক ও অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান। গত ১১ জুন হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুলাহ আলোচিত এ মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ২ জুন হবিগঞ্জ জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নিশাত সুলতানার আদালত থেকে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছিল। এদিকে, আলোচিত এ হত্যা মামলায় কারাগারে আটক রয়েছেন সিসিক এর সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জিকে গৌছসহ ১৪ জন আসামি। যুবদল নেতা এমএ কাইয়ুমসহ ১৫জন জামিনে আছেন। এছাড়া মামলা চলাকালীন একজনের মৃত্যু হয়েছে ও ভারতে পলাতক থাকা কাজলের নাম ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যের বাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত হন। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন কিবরিয়া। গ্রেনেড হামলার এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য আব্দুর মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত করছেন সিআইডি সিলেট জোনের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন নেছা পারুল। ছামির মাহমুদ/এমজেড/এমএস
Advertisement