শিশু অটিজমে আক্রান্ত কি না তা সাধারণত ১৮ মাস থেকে ২ বছর বয়সের মধ্যে বোঝা যায়। মা-বাবা বাচ্চার আচরণে অস্বাভাবিকতা বা সাধারণের চেয়ে ভিন্ন বলে ধরতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে একই বয়সের অন্য বাচ্চাদের চেয়ে খেলার আগ্রহে ভিন্নতা, সামাজিক মেলামেশা যেমন, কথাবার্তা বলা বা আকার ইঙ্গিতের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করার ভিন্নতা ইত্যাদি। কিছু কিছু বাচ্চার আবার ১ থেকে ২ বছর বয়স পর্যন্ত খেলাধুলা এবং কথাবার্তা সবই ঠিক থাকে কিন্তু হঠাৎ করে বাচ্চাটি কথাবার্তা ও সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে দেয়। এটাকে বলা হয়, রিগ্রেসিভ অটিজম। অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চাদের কেউ কেউ বেশির ভাগ সময় শব্দ, গন্ধ, স্পর্শ ইত্যাদিতে বেশি সংবেদনশীল থাকে। অটিস্টিক বাচ্চারা তাদের রুটিন মাফিক কাজে ব্যত্যয় ঘটলে রেগে যায়। তাদের বিভিন্ন জিনিসের প্রতি অতি দুর্বলতা দেখা যায়। অনেক সময় তারা একই শারীরিক ভঙ্গি বা অঙ্গ সঞ্চালন বারবার করতে থাকে। অনেক সময় তারা কথা বলার পরিবর্তে আকার-ইঙ্গিতে বোঝাতে চায়। অনেকেই অনেক দেরি করে কথা বলে। আবার অনেকে একেবারেই কথা বলতে পারে না। অন্যরা যে দিকে তাকিয়ে থাকে, সেই দিকে তাদের দেখা দেখি তাকায় না, অনেক সময় আঙুল দিয়ে কোনো দিকে-নির্দেশনা করলেও সেদিকে তাকায় না। যারা কথা বলতে পারে তারা অনেক সময় একই কথা, শব্দ, পছন্দের টিভি-বিজ্ঞাপনের কথা বা গান বারবার বলতে থাকে। করণীয় :যেহেতু এটি একটি মানসিক সমস্যা, তাই অভিভাবকদের প্রয়োজন অটিস্টিক শিশুকে একজন মনোস্তাত্ত্বিক গবেষক কিংবা মনোবিদের কাছে নিয়ে যাওয়া। সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা পেলে অটিস্টিক শিশু সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অটিস্টিক শিশু হয়তো আর সব সাধারণ শিশুর মতো সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক আচরণ করতে পারবে না। কিন্তু সাইকোথেরাপি বা স্পেশাল শিক্ষাদানের মাধ্যমে এসব শিশুকে ৮০-৯০ ভাগ পর্যন্ত সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এর ফলে শিশুটি নিজের একান্ত ব্যক্তিগত কাজ থেকে শুরু করে পারিবারিক ও সামাজিক নানা কাজেও অংশগ্রহণ করতে পারে। চিকিৎসা গ্রহণ করে সম্পূর্ণ সুস্থ-স্বাভাবিক হয়ে বিয়ে ও সংসার করাও অনেকের পক্ষে সম্ভব।এইচএন/এমএস
Advertisement