ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা করায় মামলার বাদীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় দেন।
Advertisement
মামলার বাদী সাজাপ্রাপ্ত আনু ওরফে নাজমা আক্তার শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আনু ওরফে নাজমা আক্তার ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট একই এলাকার নুর আলী শেখের ছেলে কামরুল ইসলামের (৫০) বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এতে দীর্ঘ এক মাস কারাভোগের পর ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জামিন পান তিনি। দীর্ঘ এক মাস কারাভোগের কারণে তাকে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের লাইব্রেরিয়ান পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এরই মধ্যে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনোয়ারা খাতুন তদন্ত শেষে ঘটনার সঙ্গে আসামি কামরুলের সম্পৃক্ততা না থাকায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এ রিপোর্টের বিরুদ্ধে মামলার বাদী নাজমা আক্তার পরদিন আদালতে নারাজি দেন। একপর্যায়ে আদালত তার নারাজি আমলে নিয়ে আবারও মামলাটি তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য তৎকালীন ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তিনি দীর্ঘ তদন্ত শেষে এ ঘটনায় আসামি কামরুলের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় তিনি ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর আদালতে তার বিরুদ্ধে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন। একই সঙ্গে মামলার বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতের কাছে লিখিত আবেদন জানান।
Advertisement
আদালত তার রিপোর্ট পেয়ে আসামি কামরুলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি কামরুল একই আদালতে নাজমা আক্তারের বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় একটি পাল্টা মামলা করেন।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু জানান, এ মামলায় পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনা করে নাজমা আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে কারাদণ্ড দেন। তিনি বর্তমানে পলাতক।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/এমএস
Advertisement