বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত সমতা লেদারের এবার মূলধন সংকট দেখা দিয়েছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটি সাভারের হেমায়েতপুরে কারখানা স্থানান্তর করতে পারেছে না।
Advertisement
এমন সংকটের পরও গত চার কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ১৩ টাকা। শেয়ারের এ দাম বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) তথ্যও প্রকাশ করেছে ডিএসই।
ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনের কারণ জানতে চেয়ে ২৭ আগস্ট নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের জবাবে কোম্পানি জানিয়েছে, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল (কার্যকরী মূলধন) সংকটের কারণে কোম্পানির আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কোম্পানি এখনো সাভারের হেমায়েতপুরে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯ আগস্ট থেকেই সমতা লেদারের শেয়ার দাম টানা বাড়ছে। ১৯ আগস্ট কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৩৬ টাকা ৯০ পয়সা, যা টানা বেড়ে মঙ্গলবার দাঁড়ায় ৪৯ টাকা ৬০ পয়সা।
Advertisement
এ দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে ডিএসই থেকে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয় এবং কোম্পানির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করতে তথ্য প্রকাশ করে।
মূলধন সংকটের মধ্যেই শেয়ারের এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়লেও ২০১৫ সাল থেকেই লোকসানে নিমজ্জিত রয়েছে সমতা লেদার। ফলে প্রতিষ্ঠানটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারছে না। যে কারণে পুঁজিবাজারের পঁচা কোম্পানি বা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।
১৯৯৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটি সর্বশেষ কবে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়েছে ডিএসইর ওয়েবসাইটে সে সংক্রান্ত কোনো তথ্যও নেই।
তবে ডিএসইর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সমতা লেদার ব্যবসা পরিচালনা করে ১৫ লাখ ৬০ হজার টাকা লোকসান করে। বছরটিতে শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়ায় ১৫ পয়সা। পরের বছর ২০১৬ সালে লোকসানের পরিমাণ কিছুটা কমে হয় ছয় লাখ ৪০ হাজার টাকা, শেয়ারপ্রতি লোকসান দাঁড়ায় ছয় পয়সা।
Advertisement
তবে ২০১৭ সালে সমাপ্ত হিসাব বছরে লোকসানের পাল্লা ভারি হয়। বছরটিতে লোকসান বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ লাখ ৭০ হাজর টাকা। এতে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ১৭ পয়সা।
কোম্পানিটির এ লোকসানের ধারা চলতি বছরেও অব্যহত রয়েছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের ৯ মাসে (২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের মার্চ পর্যন্ত) ব্যবসা পরিচালনা করে লোকসান হয়েছে পাঁচ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫০ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে চার দশমিক ৮৫ শতাংশ শেয়ার।
এমএএস/এএইচ/এমএস