কলেজপড়ুয়া মুক্তি খাতুনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে নির্মমভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটি। পাবনার সাঁথিয়ায় নাগডেড়া ইউনিয়নের নাগডেমরা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের এই কন্যাকে হত্যা করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
Advertisement
মঙ্গলবার রাজধানীর শান্তিনগরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান শাহীনের পরিচালনায় এক জরুরি সভায় নেতৃবৃন্দ এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, যাদের বীরত্বে ও আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের এমন অমানবিক ও পৈশাচিক হত্যা কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না। নরপিশাচরা তার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে উল্লাস করেছে, আর আমাদের বোন মুক্তি জীবন্ত দগ্ধ হয়ে আর্তচিৎকার করেছে। আট দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গতকাল তিনি চিরবিদায় নেন, যা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আরও একটি বার্তা দিয়ে গেছে।
অভিলম্বে এই নারকীয় ঘটনায় জড়িতদের বিচার ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। প্রসঙ্গত, একটি উন্মুক্ত জলাশয় দখলকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের বাড়িতে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৯ আগস্ট হামলা চালায়। এ সময় ওই মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্যান্য পুরুষ সদস্যরা বড়াল নদী পার হয়ে পালিয়ে যান। পুরুষদের না পেয়ে হামলাকারীরা মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেলের মেয়ে মুক্তি খাতুনকে ঘর থেকে টেনে উঠানে নিয়ে যায়। এর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা ওই মুক্তিযোদ্ধার একটি ঘরেও আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মুক্তির বাবা বাদী হয়ে ৩২ জনকে আসামি করে সাঁথিয়া থানায় মামলা করেছেন। কিন্তু পুলিশ এ পর্যন্ত মাত্র ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল আসামিরা এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। মুক্তি খাতুন পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
Advertisement
এইচএস/এফএইচ/জেডএ/এমএস