জাতীয়

চলে গেলেন ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন

ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন আর নেই। বুধবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এর আগে গত শুক্রবার থেকে তিনি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।  গত বৃহস্পতিবার থেকে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে না পারায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় বলে জানান বিএসএমএমইউর নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন। গত ২৫ আগস্ট মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় স্ট্রোক করেন আবদুল মতিন। পরে তাকে প্রথমে মোহাম্মদপুর সিটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ২৬ আগস্ট তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Advertisement

১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার একটি ছোট্ট গ্রাম ধুবালীয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ভাষা মতিন। তার বাবা আব্দুল জলিল ছিলেন কৃষক। মা আমিনা ছিলেন গৃহিণী।মা-বাবার কাছেই সর্ব প্রথম বর্ণমালার হাতেখড়ি নেন আব্দুল মতিন। তিনি ১৯৩২ সালে শিশু শ্রেণিতে দার্জিলিং-এর বাংলা মিডিয়াম স্কুল মহারানী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৪৩ সালে তিনি এনট্রান্স পাস করেন। ওই বছরই তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজে আই এ ভর্তি হন। ২ বছর পর ১৯৪৫ সালে তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।১৯৪৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব আর্টসে (পাশ কোর্স) এ ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ করেন এবং পরে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেন।ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, ১৯৫২ সালে ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।আব্দুল মতিনের লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে, ‘ইউরোপের দেশে দেশে’ (১৯৬০), ‘কাস্তে’ (১৯৮৭), ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রবাসী বাঙালি’ (১৯৮৯), ‘প্রবাসীর দৃষ্টিতে বাংলাদেশ’ (১৯৯১), ‘শামসুদ্দিন আবুল কালাম ও তার পত্রাবলী’ (১৯৯৮), ‘শেখ হাসিনা: একটি রাজনৈতিক আলেখ্য’ (১৯৯২), আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘স্মৃতিচারণ পাঁচ অধ্যায়’ (১৯৯৫), ‘জীবনস্মৃতি : একটি বিশেষ অধ্যায়’ (২০১২), রাজনীতি বিষয়ক গ্রন্থ ‘জেনেভায় বঙ্গবন্ধু’ (১৯৮৪), ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: কযয়কটি প্রাসঙ্গিক বিষয়’ (১৯৯৩), ‘খালেদা জিয়ার শাসনকাল : একটি পর্যালোচনা’ (১৯৯৭), ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মুক্তিযুদ্ধের পর’ (১৯৯৯), ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: কয়েকটি ঐতিহাসিক দলিল’ (২০০৮), ‘বিজয় দিবসের পর : বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ (২০০৯), ইতিহাস বিষয়ক গ্রন্থ ‘রোমের উত্থান ও পতন’ (১৯৯৫), ‘মহানগরী লন্ডন’ (১৯৯৬), ‘ক্লিওপেট্রা’ (২০০০), ‘দ্বি-জাতি তত্ত্বের বিষবৃক্ষ’ (২০০১), ‘ভলতেয়ার : একটি অনন্য জীবনকাহিনী’ (২০০২), ‘কামাল আতাতুর্ক : আধুনিক তুরস্কের জনক’ (২০০৩), ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালি : যুক্তরাজ্য’ (২০০৫), ‘ইউরোপের কথা ও কাহিনী’ (২০০৫, ২০০৭, ২০০৯